একে আজাদ, রাজবাড়ী : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে রাজবাড়ীতে ৩ দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে শহরের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ। অতিবৃষ্টিতে বিভিন্ন উপজেলায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও অতিবৃষ্টিতে ৫২৪ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সরেজমিনে জেলা শহরে ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে যানবাহন খুবই কম। বৃষ্টির মধ্যে অল্পকিছু ইজিবাইক চলাচল করছে। রিকশা নেই বললেই চলে। বৈরী আবহাওয়ার কারণেই স্থবিরতা বিরাজ করছে জনজীবনে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না অনেকেই। জীবিকার তাগিদে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের হয়েছে রিকশাচালক ও শ্রমিকসহ খেটে খাওয়া মানুষেরা। রাস্তাঘাটে মানুষ কম থাকায় তারাও পড়েছে চরম বিপাকে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও তেমন খোলেনি। অনেকেই ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া টানা বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।

রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৬টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে জেলায় কৃষিজমি আক্রান্ত হয়েছে। জেলায় মোট ৫২৪ হেক্টর কৃষি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে রোপা আমন ৪১০ হেক্টর, মরিচ ৭ হেক্টর, সবজি ৪১ হেক্টর, কলা ১৪ হেক্টর ও আখ ৫২ হেক্টর।

ফরিদপুর আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মোছা. জাহানারা খাতুন জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় বৃষ্টিপাত বেড়েছে। বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। প্রতি ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ পরিবর্তন হচ্ছে। তবে, পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

রিকশাচালক আজিবর শেখ, মজিদ শেখ, বাবলু মন্ডলসহ আরও কয়েকজন বলেন, শনিবার থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে জেলায়। এর মধ্যে আবার বিদ্যুৎ থাকছে না। বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাটে মানুষ কম। আমরা বৃষ্টির মধ্যে জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়ে রাস্তায় বের হয়েছি, কিন্তু যাত্রী পাচ্ছি না।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার বসু বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে জেলায় ৫২৪ হেক্টর কৃষি জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে রোপা আমন, সবজি, আখ, মরিচ ও কলা রয়েছে। বৃষ্টি কমলে কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ বোঝা যাবে।

রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকাল ৬টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত জেলায় ৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। জেলায় কিছু কৃষি জমি অতিবৃষ্টিতে পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি কমলে আমরা ক্ষতির পরিমাণটা নিরূপণ করতে পারব। আমাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। আমি সার্বক্ষণিক সবকিছু মনিটরিং করছি। আমার কৃষি কর্মকর্তারাও সার্বক্ষণিক সবকিছু খোঁজ-খবর রাখছেন।

(একে/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪)