রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে নাশকতার মামলা দিয়ে এক এএসআইকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করানোর অভিযোগে সাতক্ষীরা সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমানুল্লাহসহ ২১ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বড়দল গ্রামের নওশের আলীর ছেলে বরখাস্ত হওয়া সহকারি উপপরিদর্শক মাহমুদ হাসান বাবলু বাদি হয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতে বুধবার এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক নয়ন কুমার বড়াল মামলাটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার অন্যতম আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালিন উপপরিদর্শক লুৎফর রহমান, ধুলিহর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সানা ওরফে বাবু সানা, ও মাটিয়াডাঙা গ্রামের হবিবর রহমানের ছেলে জিল্লুর রহমান সেতু।

মামলার বিবরনে জানা যায়, সদর উপজেলার বড়দল গ্রামের বিএনপি কর্মী মাহমুদ হাসান লাভলু ২০১৩ সালে পুলিশের সহকারি উপপরিদর্শক হিসেবে কাজ করনতেন। রাজনৈতিক বিরোধকে কেন্দ্র করে ধুলিহর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ওরফে বাবু সানাসহ কয়েকজন তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এক মাসের মধ্যে দাবিকৃত টাকা না দিলে তাকে দেশ ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়। একপর্যায়ে বাবু সানা দুই লাখ টাকার ভাগ অন্য আসামীদের না দেওয়ায় বাকী তিন লাখ টাকার দাবিতে বাবু সানাসহ আসামীরা বাবলুকে হত্যার হুমকি দেয়। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমানুল্লাহ ও উপপরিদর্শক লুৎফর রহমানের সহযোগতায় অন্য আসামীরা নাশকতার মামলা দিয়ে বাদির চাকরি শেষ করে দেওয়ার হুমকি দেয়। মামলা বন্ধ করার জন্য থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমানুল্লাহ ও উপপরিদর্শক লুৎফর রহমানকে ৫০ হাজার টাকা করে এক লাখ টাকা দেওয়া হয়। বাকী দুই লাখ টাকা না দেওয়ায় বাদিকে সদর থানার ৪৬৬ /২০১৩ নং নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। ২০১৩ সালের ১৯ জুন আসামীরা বাদির বাড়িতে ঢুকে লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটপাট ও ভাংচুর করে। মারপিট করে লুটপাট করা হয় দুই লাখ টাকার সোনার গহনা। বাদিকে মারপিট থেকে বিরত রাখতে বাবু সানাকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। সদর হাসপাতালে যাওয়ার সময় বাদিকে বাধা দিলে তাকে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ২০২১ সালে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ওই বছরের ১৬ জুলাই রাত ৯টার দিকে বাবু সানাসহ কয়েকজন আসামী বাদির বাড়িতে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের মারপিট করে ও মালামাল লুট করে। ফাটিয়ে দেওয়া হয় বাদির মাথা। একপর্যায়ে নাশকতার মামলার কারণে বাদি চাকরিচ্যুত হন।

বাদি ওই সময় কোন সুবিচার পান নাই। একারণে পরিস্থিতি অনুকুলে আসার পর বুধবার এ মামলা দায়ের করা হলো।

সাতক্ষীরা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতের পেশকার আব্দুস সালাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

(আরকে/এএস/সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪)