স্টাফ রিপোর্টার : কৃষিঋণ বিতরণে দালালের দৌরাত্ম্য কমানোর উদ্যোগ নেওয়ার হবে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। গভর্নর বলেন, কৃষিঋণে দালালদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আমরা পর্যালোচনা করে দেখব কৃষি নিয়ে দোকানদারি বা ট্রেডিং করছে কি না। 

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক মিলনায়তনে কৃষিঋণ নীতিমালা ঘোষণা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার, বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কৃষিঋণ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, কৃষির উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে কৃষিখাতে পর্যাপ্তঋণ প্রবাহের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংকগুলোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ৩৮ হাজার কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্যমাত্রা বিগত ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ৩৫ হাজার কোটি টাকার তুলনায় ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর জন্য ১২ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা। আর বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য ২৫ হাজাট ৩৮৫ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এখন আমদানি বাড়ছে দিন দিন। কৃষিঋণ বিতরণের কারণে যদি উৎপাদন বাড়ে তাহলে আমদানি কমে আসবে। আমদানি চাহিদা বাড়ছে এটা বাড়তে থাকবে। এজন্য ব্যাংকগুলোকে বলেছি, এই ঋণ বিতরণে টার্গেট যেন পূরণ করা হয়।

বিদ্যমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ দেশের দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রান্তিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধি ও টেকসই অর্থনীতি লক্ষ্যে কৃষি ও পল্লীখাতে যথাসময়ে পর্যাপ্ত অর্থের যোগান একান্ত প্রয়োজন তিনি উল্লেখ করেন।

গভর্নর বলেন, দেশের কৃষিপণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়ানোর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এবং গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ও আয় বাড়াতে, সর্বোপরি সামষ্টিক অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা ও টেকসই উন্নয়নে প্রতিষ্ঠার নীতিমালা ও কর্মসূচি কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

তিনি বলেন, যেসব ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণী লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করছে না, সেসব ব্যাংকের বিরুদ্ধে প্রচলিত শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বাইরে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার থাকলে সেটাও নেব।

কৃষিসহ ছোট ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে মানবিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অল্প কিছু টাকা ঋণ নিয়ে এখন আমানতফেরত দিতে পারছেন না। ঋণগ্রহীতা হয়ত মারা গেছে, এমন ঋণ খাতা-কলমে ধরে না রেখে ব্যাংকের পর্ষদে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

অনুষ্ঠানে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম বলেন, কৃষিঋণ বিতরণে অর্থ পুনঃ অর্থায়ণের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে অর্থ দেওয়ার গেলে সুদ কমার পাশাপাশি কৃষিঋণ বিতরণ সহজ হবে।

লক্ষ্যমাত্রা কমপক্ষে ৩০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেন ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আরএফ হোসেন। তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা সৃষ্টিতে কৃষিঋণ আরও বাড়াতে হবে। একইসঙ্গে মান ধরে রাখতে হবে।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ২৯, ২০২৪)