শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : হাসপাতালটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয় ২০০৫ সালের ৭ মে। রাজনৈতিক বেড়াজালে আটকে বন্ধ ছিল বছরের পর পর বছর। তবে নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ২০২১ সালের ৯ জানুয়ারি সীমিত পরিসরে চালু করা হয় দেশের একমাত্র ‘ঝিনাইদহ ২৫ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতালটি’। চালু হলেও হাসপাতাল নিজেই রোগাক্রান্ত। নেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোনো ল্যাব, রয়েছে ঔষধ সংকট সহ জনবল সংকটও। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ঝিনাইদহসহ আশপাশের জেলা ও উপজেলার শত শত মানুষের। দ্রুত এসব সংকট সমাধান করে হাসপাতালটি পুরোদমে চালু করার দাবি স্থানীয়দের।

জানা যায়, ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের বাস টার্মিনাল এলাকায় ২৫ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতালটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। রাজনৈতিক বেড়াজালে আটকে বছরের পর পর বন্ধ থাকে হাসপাতালটি। পরে ২০২১ সালের ৯ জানুয়ারি সীমিত পরিসরে চালু করা হয়।

রোগী ও স্বজনরা জানায়, দীর্ঘদিন পর চালু হলেও নানা সংকট রয়েছে হাসপাতালটিতে। জনবল সংকটের পাশাপাশি সংকট রয়েছে ঔষধ সরবরাহের। দেশের একমাত্র সরকারি শিশু হাসপাতাল হওয়া স্বত্বেও নেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোনো ল্যাব। যে কারণে হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরও বাড়তি টাকা খরচ করে প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিক থেকে পরীক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি খরচ হচ্ছে বাড়তি টাকা। তাই দ্রুত হাসপাতালটিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাব চালু করার দাবি রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসীর।

শিশু রোগীর পিতা আকমল বলেন, ‘ছেলের হঠাৎ জ্বর, ঠাণ্ডা ও কাশি দেখা দিলে তাকে শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসি। তবে এসে দেখি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোনো ল্যাব নেই । তাই বাড়তি টাকা খরচ করে প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে পরীক্ষা করাতে হয়েছে। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি বাড়তি টাকা খরচ হয়েছে। যদি হাসপাতালে ল্যাব চালু থাকতো তাহলে ভোগান্তির পাশাপাশি বাড়তি খরচ হতো না।’

রোগীর স্বজন শাহিদা বেগম বলেন, ‘বোনের মেয়ে হঠাৎ অসুস্থ হলে শিশু হাসপাতালে এনে দেখি অনেক রোগীর ভীড়। টিকিট কেটে ডাক্তার দেখালে কিছু টেস্ট দেয়। কিন্তু হাসপাতালে কোনো টেস্টের ব্যবস্থা না থাকায় প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে করাতে হয়েছে। দ্রুত হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাব চালু করার দাবিও জানান তিনি।’

ঝিনাইদহ ২৫ শয্যা শিশু হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডা.আলী হাসান ফরিদ জানান, ‘সরকারি বরাদ্দ কম থাকার কারণে স্থানীয় সহযোগিতায় চলছিলো অন্যান্য কাজ। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তা নিয়েও চিন্তিত।’

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, ‘হাসপাতালে ল্যাব চালুসহ সংকট সমাধানের চেষ্টা করছি। আশা করি দ্রতই এই সমস্যার সমাধান হবে।’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, ২৫ শয্যার শিশু হাসপাতালে বর্তমানে বহির্বিভাগে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আসা আড়াই’শ থেকে তিন’শ ও আন্তঃবিভাগে ৬০ থেকে ৭০ জন শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে।

(এসআই/এসপি/আগস্ট ২৪, ২০২৪)