স্টাফ রিপোর্টার : দেশে ঘটে যাওয়া সহিংসতায় প্রাণহানিতে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয় ও দুঃখজনক বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, যে কোন প্রাণের ক্ষয়ক্ষতি অপূরণীয় এবং দুঃখজনক। এজন্য মর্মাহত। আমরা প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আন্তরিকভাবে এটি চান। 

আজ রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক এসময় উপস্থিত ছিলেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নয় কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতাধীন সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ও মোবাইল ভেটেরিনারি ভেটেরিনারি হাসপাতাল ভাঙচুরের ফলে আনুমানিক ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া রংপুর জেলা ও বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অফিসে ভাঙচুরের ফলে সর্বমোট প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রহমান বলেন, সাভারে এমন ভাবে ভাঙচুর করা হয়েছে চোখে না দেখলে এগুলো বিশ্বাস করা যায় না। দেখে মনে হয়েছে এসব স্থাপনার সাথেই যেন যুদ্ধ করা হয়েছে। সাভার প্রাণিসম্পদ অফিসে ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের টিভি, ফ্রিজ, এসিসহ সকল আসবাবপত্র ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনার পরদিন দুজন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে দেখতে গেলে তাদেরকেও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে এবং এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪ জনের কাছ থেকে লুটকৃত মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।

দুষ্কৃতিকারীদের রাজনৈতিক পরিচয় জানা গেছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক তারা কোন স্কুল কলেজের ছাত্র না। স্কুল কলেজের নিয়মিত ছাত্র হিসেবে তাদের কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে। তবে যারা বিটিভি ভবন, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা, ডিজাস্টার ভবন, সেতুভবনে আগুন দিয়ে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালিয়েছে, তাদের মতই কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।

সাভারে মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক ভাঙচুর করায় সেবা প্রদান করা ব্যাহত হবে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত এটি চালু করা সম্ভব না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত ব্যাহত হবে। তবে এই মুহূর্তে এটি চালু করার মত অবস্থায় নেই বলে তিনি জানান।

সহিংসতায় খামারিদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে একটি কমিটি তৈরি করে দেয়া হবে। সেই কমিটি এটি নির্ণয় করে প্রতিবেদন দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে প্রানিজ পণ্য যেমন: দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, পরিবহন ও বিপণনের জন্য খামারিদের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। খামারিদের ক্ষতির বিষয়টি মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে দেখবে।

(পিআর/এসপি/জুলাই ২৮, ২০২৪)