বিনোদন ডেস্ক : ফেডারেশনকে না জানিয়ে ঢাকায় এসে শুটিং করায় নির্মাতা রাহুল মুখার্জিকে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে টালিউড নির্মাতাদের সংগঠন ‘ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’। এ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। রাহুলের পাশে দাঁড়িয়েছেন টালিউড নির্মাতারা, জানিয়েছেন প্রতিবাদ।

গত বছরের ৪ অক্টোবর কলকাতায় কার্যক্রম শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকির। ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল তিন বছরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ৩০টি কনটেন্ট নির্মাণ করবে প্ল্যাটফর্মটি। এর মধ্যে ‘লহু’ নামের একটি সিরিজের কাজও শুরু হয়েছিল। রাহুল মুখার্জির পরিচালনায় সিরিজটিতে চুক্তিবদ্ধ হন বাংলাদেশের আরিফিন শুভ ও পশ্চিমবঙ্গের সোহিনী সরকার। তবে টালিউডের ফেডারেশনগুলোর অতিরিক্ত পারিশ্রমিকসহ বিভিন্ন দাবীর কারণে কলকাতায় কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় চরকি। ফলে মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায় লহুর শুটিং। জানা গেছে, সেই সিনেমার বাকি অংশের শুটিং শেষ করতেই কয়েকজন কলাকুশলীসহ বাংলাদেশে এসেছিলেন রাহুল। প্রথমে শুটিংয়ের বিষয়টি আড়াল করলেও পরে বাংলাদেশে শুটিং করার কথা স্বীকার করেন নির্মাতা। ফেডারেশনকে না জানিয়ে ঢাকায় এসে শুটিং করার অভিযোগে আগামী তিন মাসের জন্য রাহুলকে নিষেধাজ্ঞা দেয় ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া।

এ ধরনের ঘটনা আগে টালিপাড়ায় ঘটেনি। তাই রাহুলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা কতটা যুক্তিযুক্ত, সে প্রশ্ন তুলেছেন অন্য নির্মাতারা। পরিচালকদের একাংশ মনে করছেন, একজন পরিচালকের সমস্যায় বাকিরা না দাঁড়ালে ভবিষ্যতে আরও খারাপ দিন আসতে পারে। তাই সময় থাকতেই তাঁরা প্রতিবাদে শামিল হতে চাইছেন।

পরিচালক অরিন্দম শীল বলেন, ‘আমি জানতে চাই, বাংলার বাইরে কোনো পরিচালক কাজ করতে চাইলে তাঁকে কি ফেডারেশনকে জানাতে হবে? এ নিয়ে কোনো আইন রয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। রাহুলের এই শাস্তি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। রাহুল যদি সত্যিই দোষ করে থাকে, তা হলে কী কী করলে আমি দোষী হতে পারি, সেটাও আমি বুঝতে চাই। এই শাস্তির বৈধতা সম্পর্কেও জানতে চাই।’

অঞ্জন দত্ত বলেন, ‘সমস্যা হতেই পারে। কিন্তু সেটা মিটিয়ে নেওয়া উচিত। একজন পরিচালককে নিষিদ্ধ করে তাদের কোনো লাভ হবে না। তাই ফেডারেশনেরই উচিত এগিয়ে এসে সমস্যার সমাধান করা। আমি শিল্পের পক্ষে, শিল্পীকে নিষিদ্ধ করে কোনো ইন্ডাস্ট্রির উন্নতি সম্ভব নয়।’

কৌশিক গাঙ্গুলি বলেন, ‘যত দিন স্বাধীনতা থাকে শিল্পীর, তত দিনই সে প্রতিষ্ঠানকে মর্যাদা দেয়! কারও আদেশে বাঁচবে না, স্বাধীনভাবে সৃষ্টি করবে বলেই সে অনিশ্চয়তায় ভরা পেশা বেছে নেয় যুগে যুগে। আপ্রাণ লড়াই করে যখন বাংলায় বড় পর্দাকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে, তখন “ব্যান” শব্দটা খিস্তির থেকেও অশ্রাব্য। পৃথিবীর কোনো শক্তি বা প্রতিষ্ঠান শিল্পী বা শিল্পের চেয়ে বড় নয়।’

জানা গেছে, পরিচালকদের প্রতিবাদের মুখে রাহুলকে নিয়ে ডিরেক্টর্স গিল্ড একটি বৈঠক ডেকেছে। আজ এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন টলিপাড়ার একাধিক নির্মাতা।

(ওএস/এএস/জুলাই ২৫, ২০২৪)