শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : কোটা সংস্কারের দাবিতে দিনাজপুরে জেলা ও শহর আওয়ামী লীগের অফিসসহ ৭ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। দিনব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া,হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশ,সাংবাদিক সহআহত হয়েছে কমপক্ষে ২৫ জন।

দিনাজপুর পুরো শহর যেনো পরিনত হয় রণক্ষেত্রে । সকাল থেকেই শহরের দোকান পাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। যাননাহন চলাচল ছিল কম। দুরপাল্লার যানবাহনও চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ আন্দোলন দিনাজপুর শহর ছেড়ে পৌঁছ গেছে গ্রাম অঞ্চলেরও। বীরগঞ্জ,বিরামপুর, ঘোড়াঘাট,খানসামা,চিরিবন্দর বন্দর সহ জেলার অধিকাংশ উপজেলাতেই শিক্ষার্থীরা মাঠে আন্দোলনে নেমেছে। এমনকি স্কুলের ড্রেস পরিধান জরেও নারী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দেখা গেছে।

সকাল ১১ টা থেকেই শহরের মোড়ে মোড়ে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এনিয়ে শহরের বাসুনিয়াপ্ট্রিস্থ শহর ও জেলা আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে বেলা সাড়ে ১২ টায় আন্দোলনকারিদের সাথে আওয়ামীলীগ এবং ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে আন্দোলনকারিরা কালিতলাস্থ সাদেস্বরী স্কুল মোড়ে অবস্থান নেয়। দুপুর দুইটায় কোতয়ালী থানায় সামনে পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙ্গে আন্দোলনকারিরা আবার আওয়ামীলীগ অফিসে আসে। শহর অফিস তালা বন্ধ থাজলেও জেলা আওয়ামীলীগ অফিসের চেয়ার-টেবিল ও আসবাবপত্র ভেঙ্গে তছনছ করে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। শহর ও জেলা আওয়ামীলীগ অফিসের সামনে রক্ষিত ৭ টি মোটর সাইকেল ভেঙ্গে গুড়িয়ে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ সময় জেলা আওয়ামীলীগ অফিসেও আগুন লাগিয়ে দেয় আন্দোলনকারিরা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনাম উল্লাহ জ্যামী,যুগ্ম সম্পাদক নওশাদ ইকবাল কলিস্ক, ফোট সাংবাদিক নুর ইসলামসহ ২৫ জন আহত হয়। এরপর শহর জুড়ে আন্দোলনকারীরা রাস্তায় নেমে পড়ে। পরে পুলিশের সঙ্গে চারুবাবুর মোড়, মর্ডাণ মোড়, নিমতলা মোড়, হাসাপাতাল মোড়, লিলির মোড়, বাহাদুর রাজার মোড়, ষ্টেশর রোডসহ সারা শহরে দফায় দফায় দাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। আন্দোলনকারীরা আওয়ামীলীগের ব্যানার ফেষ্টুন একত্রিত করে বিভিন্ন মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

লিলির মোড়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় আব্দুর রশিদ নামে এক কনষ্টবলসহ ২ পুলিশ আহত হয়।
পুলিশ আহতের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, জেলা পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহম্মেদ।

তিনি জানান, 'শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে জামায়াত-বিএনপি অনুপ্রবেশ করে নাশকতা মুলক কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে। তারা একদিকে সংঘর্ষ বাধিয়ে দিয়ে অন্যদিকে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটাচ্ছে। এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।'

এদিকে শহরময় গুজব ছড়িয়ে পড়ে আওয়ামীলীগ অফিসের সামনে আন্দোলনকারি দুই ছাত্র মারা গেছে।,কিন্তু,কেউ এর সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতি ছিলো থমথমে।

(এসএএস/এএস/জুলাই ১৮, ২০২৪)