রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : কুপ্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় এক নারীকে এসিড মেরে ঝলসে দেওয়া হয়েছে। বুধবার রাত ৯টার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বাজারগ্রাম রহিমপুরে প্রেরণা অফিস চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই নারীকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এসিডদগ্ধ ও নারীর নাম জাহানারা খাতুন (৪৫)। তিনি কালিগঞ্জ উপজেলার বাজারগ্রাম রহিমপুরের আদম জোয়ার্দ্দারের স্ত্রী।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাহানারা খাতুন জানান, তিনি বেসরকারি সংস্থা প্রেরণা অফিসে রান্নার কাজ করেন। একই উপজেলার পানিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদ তাকে বিভিন্ন সময়ে কুপ্রস্তাব দিত। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হামিদ তাকে মোবাইল ফোনেও বিরক্ত করতো। বুধবার রাত ৯টার দিকে হামিদ তাকে মোবাইল ফোনে কালিগঞ্জ- শ্যামনগর সড়কে প্রেরণা অফিসের সামনে আসতে বলে। একপর্যায়ে তিনি সোয়াবিন তেল কেনার জন্য অফিস থেকে বের হয়ে রাস্তার উপর ওঠার আগেই হামিদ (৫৩) ও তার সহযোগী সাগরকে (২৫) রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন।

একপর্যায়ে হামিদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সাগর তাকে পিছন দিক থেকে জাপটে ধরে। হামিদ একটি বোতলে থাকা তরল পদার্থ তার মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় বোতলে থাকা এসিডে ঝলসে যায় তার মুখ মণ্ডল, বুক, পেট ও শরীরের নীচের অংশ। তিনি চিৎকার শুরু করলে পালিয়ে যায় হামিদ ও সাগর।

স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কালিগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ব্যাপারে সন্ধিগ্ধ আব্দুল হামিদ ও সাগর হোসেনের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ সাইফুল ইসলাম জানান, জাহানারা খাতুনের শরীরে যে তরল পদার্থ ঢেলে দেওয়া হয়েছে কি ধরণের এসিড এই মুহুর্তে বলা যাবে না। তবে তার শরীরের ৩০ শতাংশের বেশি দগ্ধ হয়েছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শাহীন জানান, খবর পেয়ে জাহানারদের বাড়িতে যেয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

(আরকে/এএস/জুলাই ১৮, ২০২৪)