আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : কোটা বিরোধী সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে এতদিন স্বাভাবিকভাবে দেখলেও বর্তমানে স্বাধীনতা বিরোধী তৃতীয় পক্ষের উস্কানী আর মদদে রাজপথে উত্তপ্ত পরিস্থিতি আর সংঘাতে প্রাণহানীর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আগৈলঝাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দরা। 

তৃতীয় শক্তির মদদে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করতে এবার রাজপথে কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন আগৈলঝাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের নেতৃবৃন্দরা।

কর্মসূচি ঘোষণা উপলক্ষে আজ বুধবার দুপুরে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধ সংসদ কার্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আবু তাহের মিয়ার সভাপতিত্বে প্রস্তুতি সভায় বক্তব্য রাখেন বরিশাল জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাবাসন ইউনিট কমান্ডার ও আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক (অব) লিয়াকত আলী হাওলাদার, সাবেক দপ্তর সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সরদার, সাবেক ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমান্ডার বখতিয়ার সিকদার, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোজাম্মেল হক, সদস্য লিয়াকত আলী বক্তিয়ার, আলহাজ্ব বাবুল আহম্মেদ প্রমুখ।

সভায় আগামী ২০ জুলাই শনিবার সকাল দশটায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যসহ সন্তান কমান্ডের সদস্যগন এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির জনগনকে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্তরে কোটা বিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দেন তারা।

নেতৃবৃন্দরা বলেন- দেশ স্বাধীন হলে মুক্তিযোদ্ধারা কোন কোটা পাবেন এমন উদ্যেশ্য নিয়ে জীবন বাজী রেখে দেশ স্বাধীন করতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেননি তারা। “আমরা বাঙ্গালী” এই শ্লোগানে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন হয়। পরে সরকার তাদের বীরের মর্যাদা প্রদান করে রাষ্ট্রিয় সম্মান দিয়েছেন। চাকুরীতে মেধার সাথে তাদের সন্তানদের কোটার সুবিধা দিয়েছেন। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে আজ হঠাৎ করে কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু হলো। তারা প্রশ্ন রেখে বলেন এই আন্দোলন কেন? কাদের স্বার্থে এই আন্দোলন? কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এখন নিজেদের গায়ে “রাজাকার’ প্লেকার্ড লাগিয়ে, শ্লোগান দিয়ে রাজপথে আন্দোলনে নামছে। এমনকি জাতির পিতাকে কটুক্তি করতেও তারা ছাড় দিচ্ছেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকে বিকৃত করে উপস্থাপন করে আন্দোলন চাঙ্গা করতে মরিয়া হয়ে এখন আন্দোলন চালাচ্ছে কাদের মদদে ? স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি ওই আল বদর, রাজাকার, আল শামস্, স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-বিএনপির ইন্ধনে কোটার নামে আন্দোলন করে রাষ্ট্রিয় সম্পদ নস্ট করে দেশে অরাজকতা তৈরী করে ঘোলা জলে মাছ শিকার করতে চাইছে। এটা কোন রকমইে মুক্তিযোদ্ধারা হতে দেবে না। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে সাথে নিয়ে দেশ বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করারও ঘোষণা দেন মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দরা।

নেতৃবৃন্দরা আরও বলেন- এর আগে সরকার এক নির্বাহী আদেশে কোটা পদ্ধুতি বিলুপ্ত করলেও মাহামান্য হাই কোর্ট সরকারের সেই নির্বাহী আদেশ অবৈধ ঘোষণা করে রায় প্রকাশ করে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আদেশ দেয়ার জন্য এক মাসের স্থগিতাদেশ প্রদান করেছেন। এমনকি আদালত কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের পক্ষভুক্ত হয়ে আদালতে তাদের দাবি-দাওয়া পেশ করা এবং প্রয়োজনে কোট পদ্ধুতি সংসকারের জন্য মতামত দিতে বললেও তারা সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে আন্দোলনের নামে জালাও পোড়াও করছে। যাতে প্রান হানীও ঘটছে। দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদালত অবমামনা করে কাদের স্বার্থে এই আন্দোলন করছে?

(টিবি/এসপি/জুলাই ১৭, ২০২৪)