নগরকান্দা প্রতিনিধি : ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় ৩৪ নাম্বার তালিকা ভুক্ত উপজেলার পুরাপাড়া ইউনিয়নের দফা গ্রামের মৃত হোসেন ফকির এর ছেলে সাহেদ আলী ফকির। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগী বাহিনী রাজাকার, আল-বদর ও আল- শামস বাহিনী কতৃক গণহত্যা, ধর্ষণ, লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগ, মানবতা বিরোধী অপরাধ সহ অন্যান্য অপরাধের তদন্ত করেন ২৫ নভেম্বর ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জ্যৈষ্ঠ তদন্তকারী কর্মকর্তা অতিঃ আইজিপি (অবঃ) মোঃ আবদুর রহিম, বিপিএম। 

এসময় তার সাথে তদন্তকারী হিসেবে ছিলেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ শফিকুর রেজা বিশ্বাস। তৎকালীন নগরকান্দা উপজেলা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলতাফ হোসেন, ডেপুটি কমান্ডার মোঃ ফজলুল হক স্বাক্ষরিত রাজাকার তালিকা করা হয়েছে। রাজাকার তালিকায় ৩৪ নাম্বারে সাহেদ আলী ফকির এর নাম রয়েছে।

স্থানীয় অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসী জানান, সাহেদ আলী ফকির ছিলেন একজন রাজাকার তার শশুরও ছিলেন রাজাকার। যুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনীরা তার শশুরকে গুলি করে হত্যা করে। রাজাকার তালিকায় নাম থাকা সত্বেও নিজের নাম পরিবর্তন করে কিভাবে মুক্তিযোদ্ধা হয় তা জাতি আজ লজ্জিত। নিজের নাম-গ্রাম-পাড়া-মহল্লা পরিবর্তন করে শামাবুদ্দীন নামে মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকায় নাম লেখায়। উপজেলা যাচাই-বাছাইতে রাজাকার তালিকায় নাম থাকায় তার মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে বন্ধ থাকে। পূনরায় ২০২৩ সালের কয়েক মাস পরেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর অফিস কার্যালয় থেকে তার হাতে পান ডিজিটাল স্মার্ট আইডি কার্ড।

পুর্বেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয় রাজাকার সাহেদ আলী মুক্তিযোদ্ধা শামাবুদ্দীন এর গল্প কাহিনি। যাচাই বাছাইর দিন তথ্য সংকল্পিত তদন্তকারী সংস্থার নিকট লিখিত অভিযোগ করেন স্হানী একজন সাংবাদিক। তবুও মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকা থেকে বাদ পড়েনি রাজাকার সাহেদ আলী ওরফে মুক্তিযোদ্ধা শামাবুদ্দীন।

অভিযোগকারী সাংবাদিক মিজানুর রহমান বলেন, রাজাকার তালিকায় সাহেদ আলী ফকির এর নাম স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসী যুদ্ধ প্রতাক্ষদর্শীদের নিকট থেকে তথ্য নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করি এবং ফরিদপুর সার্কিট হাউস যাচাই বাছাই কালীল সময় তদন্ত সংস্থার নিকট লিখিত অভিযোগ করি।

রাজাকার তালিকায় নাম থাকা সত্বেও সাহেদ আলী ফকির ওরফে শামাবুদ্দীন কিভাবে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম লেখিয়েছে জবাবে সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ ফজলুল হক বলেন, টাকা দিয়ে উপর থেকে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে এসেছে। মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম লেখিয়ে তার দুই ছেলেকে মুক্তিযোদ্ধার কোঠায় পুলিশের চাকরি দেন।

রাজাকার তালিকায় সাহেদ আলী ফকির এর নাম থাকা সত্বেও নিজের নাম পরিবর্তন করে শামাবুদ্দীন ফকির নামে মুক্তিযোদ্ধা হলেন কিভাবে জানতে চাইলে তিনি কোন জবাব না দিয়েই ঘরের ভিতর প্রবেশ করেন।

(পিবি/এসপি/জুলাই ১৫, ২০২৪)