বিশেষ প্রতিনিধি : ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বারাংকুলা গ্রামের জনৈক আব্দুল আলিম খান নিজে মুক্তিযুদ্ধ না করেও মুক্তি যোদ্ধার সনদ ব্যবহার করে সর্বোচ্চ অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন।

জানা যায়, তিনি বর্তমান সরকার আমলের একজন প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রীর দূরসম্পর্কের আত্মীয়তার সুবাদে একখানা মুক্তিযোদ্ধার সনদ হাতিয়ে নিয়ে সনদের অপব্যবহার করে যাচ্ছেন। কথিত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আলিম খানের পাচঁ সন্তানের মধ্যে দুই ছেলে এক মেয়ে কোটা সুবিধা নিয়ে সরকারি চাকুরী করছেন। বড় ছেলে সেলিমুজ্জামান খান সেলিম আলফাডাঙ্গা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে, ছোট ছেলে জসিম খান পটুয়াখালি পায়রা বন্দরে এবং ছোট মেয়ে লাভলী খানম মাদারীপুর সদর উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত। তার সনদের সুবিধাভোগীর সংখ্যা এখানেই শেষ নয়। তিনি মুক্তিযোদ্ধা সনদের সর্বোচ্চ অপব্যবহার করে মেঝ মেয়ে এসমোতারার স্বামী রজব আলীকে আপন সন্তান সাজিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকুরী দিয়েও সমাজে মাথা উঁচু করে পোদ্দারী করে যাচ্ছেন।

ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আলিম খান প্রভাবশালী মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক মন্ত্রীর খুঁটোর জোরে বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য।

ইতোপূর্বে জনৈক রেজাউল করিমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আব্দুল আলিম খানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আসলেও অদৃশ্য কারণে তদন্ত রিপোর্ট আলোর মুখ দেখেনি।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, আব্দুল আলিম খানের কথিত ছেলে রজব আলী আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের বারাংকুলা গ্রামের ভোটার তালিকার পুরুষ ২১৮ নম্বর ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত হলেও সে প্রকৃতপক্ষে পার্শ্ববর্তী বানা ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের মৃত আফসারউদ্দীন মোল্লার মেঝ ছেলে। আব্দুল আলিম খানের অন্যান্য সন্তানের মায়ের নাম রাহেলা বেগম হলেও রজব আলীর মায়ের নাম তারা বেগম। আলীম খানের দ্বিতীয় স্ত্রীর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। রজব আলী বর্তমানে ভাঙ্গা উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত আছেন।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, রজব আলীর মেয়ে রেহেনা আক্তার ঝুমুর ২০২৪ সালে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অধ্যয়নরত আছেন। এলাকার মানুষের জিজ্ঞাসা আব্দুল আলিম খানের নাতনীর এমবিবিএস পড়ার সাথে কি আবেদ আলী গংয়ের সম্পর্ক আছে কি?

এ ব্যাপারে আব্দুল আলিম খানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে, তিনি বলেন, রজব আলী তাঁর জামাতা। রজব আলীর পিতা আফছার উদ্দিন মোল্লার স্থলে আব্দুল আলিম খান হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তাঁর বেশ কয়েকটা নামের মধ্যে আব্দুল আলিম খান একটা। আফছার উদ্দিন মোল্লা কীভাবে আব্দুল আলিম খান হলেন? এ কথার যৌক্তিক জবাব তিনি দিতে পারেননি।

(কেএফ/এসপি/জুলাই ১৪, ২০২৪)