উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : ঢাকা থেকে চাঁদপুর এবং চাঁদপুর থেকে ঢাকা অসংখ্য যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করে। এসব যাত্রীবাহী লঞ্চে ডেকের ভাড়া ১৯০-২০০টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণীর চেয়ার ২৫০-২৬০ টাকা, প্রথম শ্রেণীর চেয়ার ২৮০-৩০০ টাকা এবং বিজনেস ক্লাস (এসি) ৩৫০-৩৮০ টাকা। এসব লঞ্চের প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী চলাচল করে। লঞ্চের অব্যবস্থাপনা ও যাত্রী হয়রানির কারণে কমেছে যাত্রী সংখ্যা। অনেক যাত্রী নদী পথে না যেয়ে সড়ক পথে ও ঢাকা চাঁদপুর চলাচল করছে। বুধবার (১০ জুলাই) সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের লালকুটি ঘাটে এসে দেখা গেল দুটি লঞ্চের স্টাফ ও কর্মকর্তারা ডেকে ডেকে যাত্রীদের ৫০ টাকা করে লঞ্চে উঠাচ্ছে।

লঞ্চ কর্মকর্তাদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্ত বলেন, প্রতিযোগিতার মাধ্যমে লঞ্চে যাত্রী উঠানো হচ্ছে, তাই যাতে লঞ্চে যাত্রী বেশি পাওয়া যায় সেজন্য ১৯০ টাকার টিকেট ৫০ টাকায় দেওয়া হচ্ছে। ওই লঞ্চে যখন ছেড়ে যাবে, কখন আবার এই লঞ্চের ভাড়া নির্ধারিত হারিয়ে নেওয়া হবে। যেহেতু লঞ্চে লঞ্চে যাত্রী কম হচ্ছে তাই একটি বিশেষ সুযোগের মাধ্যমে যাত্রীটা না হচ্ছে।

লঞ্চে আরোহনকারী এক যাত্রী জানান, আগে ঢাকা চাঁদপুর রুটে অনেক যাত্রী আসলো টিকিটের জন্য আগেই বুকিং দিতে হতো কিন্তু এখন আর টিকিটের জন্য অগ্রিম বুকিং দিতে হয় না। কারণ হিসেবে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, লঞ্চ মালিকদের অনেক অব্যবস্থাপনা রয়েছে। খাবারের মূল্য অনেক বেশি।

প্রায় লঞ্চে দেখা যায়, বিজনেস ক্লাসের ভাড়া নিয়ে কোনরকম চেয়ারে যাত্রী আনা নেওয়া করছে। আবার কোন লঞ্চে যাত্রীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত প্রাপ্য সেবা পাচ্ছেন না। এছাড়াও লঞ্চের স্টাফদের নানা রকম দুর্ব্যবহার কারণে এখন আর নদীপথে যাতায়াত করছে না অনেকেই। তাছাড়া ঢাকা চাঁদপুর নৌ রুটে যাতায়াতকারী যাত্রীরা চাঁদপুর এবং ঢাকা সদর ঘাটে মালামাল নিয়ে নামার পর অনেক হয়রানি শিকার হতে হয়। এসব কারণে অনেক যাত্রী নৌপথে না গিয়ে সড়ক পথে যাতায়াত করছেন।

এছাড়াও ঢাকা চাঁদপুর নৌরুটে অনেক লঞ্চের যাত্রীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নেই। আপেল লঞ্চের স্টাফদের দুর্ব্যবহার, খাবারের অত্যাধিক মূল্য, যাত্রী হয়রানি ইত্যাদি।

আরেক যাত্রী জানান, বেশিরভাগ লঞ্চে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নেই। এদের মধ্যে দুই একটি লঞ্চে ভালো সেবা দিলেও বেশিরভাগ লঞ্চেই যাত্রীদের পড়তে হয় নানা রকম হয়রানিতে। তাছাড়া ঘাটে সিএনজিও রিকশা ড্রাইভারদের দৌরাত্মক থাকছেই।

এছাড়াও সড়কপথে যাতায়াত সুবিধা ও সময় কম লাগার কারণে অনেক যাত্রীই নদীপথে না যেয়ে সড়ক পথে যাতায়াত করছে।

উল্লেখ্য, ১০ জুলাই ১১টা ৩০ মিনিটে এমডি ইমাম হাসান ৫ ঢাকা থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে আর আর ময়ূর-১০ লঞ্চটি দুপুর বারোটা ত্রিশ মিনিটে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। ময়ূর লঞ্চটি বেলা পৌনে তিনটায় চাঁদপুরের কাছাকাছি এসে ইমাম হাসান-৫ অতিক্রম করে। এখানে ময়ূর ১০ লঞ্চের ঢাকা থেকে চাঁদপুরে পৌঁছতে সময় লাগে মাত্র দুই ঘণ্টা ৩০ মিনিট।

ময়ূর লঞ্চের এক কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান, আজকে নিয়ে আমরা পরপর ৭দিন এই সময়েই ঢাকা থেকে চাঁদপুর এসে পৌঁছে যাই।

(ইউএইচ/এসপি/জুলাই ১০, ২০২৪)