স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ : ‘বীর নিবাস’র দেয়ালে ধরেছে ফাটল, খসে পড়ছে প্লাস্টার,মাত্র কয়েকমাস আগে প্রলেপ দেয়া রং উঠে যাচ্ছে। ত্রুটিপূর্ণ পানির লাইনের কারণে সাবমার্সিবল পাম্পের পানি সরবরাহ হয় না। ঝুঁকিপূর্র্ণ বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার ফলে বসবাস অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। বীর নিবাসের এমন চিত্র দেখা গেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপায়।

জানা যায়, গত বছর উপজেলার বেড়বাড়ি গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকারীভাবে ৬টি ‘বীর নিবাস’ নামের বাড়ি উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। তবে সেগুলো নির্মাণে অবহেলার কারণে দুই কক্ষেও ওই বাড়িগুলো এখন বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে।

বেড়বাড়ি গ্রামের বীর নিবাসের বাসিন্দারা জানান, ৭ থেকে ৮ মাস আগে ঠিকাদাররা তাদের বাড়িগুলো বুঝে নিতে চাপ দেয়। সেগুলো বসবাসের উপযোগি হবার আগেই জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয় তাদের কাছ থেকে। তারাও বাধ্য হয়ে ওঠেন বীরনিবাসে। বাড়িতে উঠেই দেখতে পান ঘরের দেয়ালে ফাটল ধরেছে, সেখানকার প্লাস্টার খসে পড়ছে, মাত্র কয়েকমাস আগে প্রলেপ দেওয়া রং উঠে যাচ্ছে। ত্রুটিপূর্ণ পানির লাইনের কারণে সাবমার্সিবল পাম্পের পানিও পাওয়া যাচ্ছে না, এমনকি ঝুঁকিপূর্ণ বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার কারণে বসবাসের অনিরাপদ হয়ে উঠেছে ঘরগুলো।

বীর মুক্তিযোদ্ধা তোরাপ মন্ডলের ছেলে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাবা মারা যাওয়ার পর উপজেলা প্রশাসন দু’কক্ষের একটি বীরনিবাস আমাদের করে দিয়েছিল। ভেবেছিলাম পরিবার নিয়ে অন্তত স্বাভাবিক ভাবে ওই বাড়িতে বসবাস করতে পারবো। ঘরের প্লাস্টার খসে পড়ছে, সেখান থেকে প্লাস্টার খসে পড়ছে। পানি সরবরাহের জন্য যে সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে তাতে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ঘরগুলো আমাদের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।’

আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা গফুর মন্ডলের ছেলে ইমরান হোসেন বলেন, ‘ঘরের চারদিকে দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। নিম্নমানের বৈদ্যুতিক সামগ্রী ব্যবহারের কারণে বাড়ির লাইনগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ সময় অন্ধকারে থাকতে হয়। পানি সরবরাহের ব্যবস্থাও ভালো না। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। দ্রুত ঘরগুলোতে আমাদের বসবাসের উপযোগি করে দেওয়া হোক।’

এ বিষয়ে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মেহেদি ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগিরা একটি অভিযোগ দিয়েছেন। আমি সরেজমিন গিয়ে বাড়িগুলো পরিদর্শন করবো। তারপর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সাথে আলাপ করে বীর নিবাসগুলো বসবাসের উপযোগী করে দেওয়া হবে।’

(একে/এসপি/জুলাই ০৯, ২০২৪)