রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : দীর্ঘ দুই মাসের আন্দোলনের পর অবশেষে ফরিদপুরে স্টপেজ পেয়েছে চন্দনা কমিউটার ট্রেন। স্টপেজ পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো ফরিদপুর স্টেশনে থামে ট্রেনটি। এতে আন্দোলনকারীদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।

মঙ্গলবার ভোরে ফরিদপুর রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘ প্রতীক্ষা নিয়ে সেখানে অবস্থান করছেন আন্দোলনকারীরাসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। ভোর ৫টা ৩৫ মিনিটে ফরিদপুর স্টেশনে থামে ট্রেনটি। চন্দনা কমিউটার ফরিদপুর স্টেশনে পৌঁছালে উপস্থিত জনতা তুমুল করতালির মাধ্যমে ট্রেনটিকে স্বাগত জানান।

ফরিদপুর স্টেশনে কমিউটার ট্রেনটি দুই মিনিট অবস্থান করে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

ট্রেনটির স্টপেজের দাবিতে আন্দোলনে থাকা মো. সেলিম মিয়া নামে এক তরুণ বলেন, ‘এটি আমাদের দীর্ঘ দুই মাসের আন্দোলনের ফসল। ট্রেনটি ফরিদপুরের ওপর দিয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু কোনো স্টপেজ ছিল না। ফরিদপুরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, তরুণ সমাজসহ ফরিদপুরবাসীর একত্রিত সংগ্রামে আজ তা বাস্তবায়িত হলো। আমরা রেলমন্ত্রী ও কর্তৃপক্ষকে ফরিদপুরবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

তরুণ সংগঠক আবরার নাদিম ইতু বলেন, 'আমাদের আন্দোলনের সফলতা পেয়েছি। এতে ফরিদপুরবাসী ভীষণ উপকৃত হবে। আমরা সকালে ঢাকায় অফিসও করতে পারব এবং প্রয়োজনীয় কাজ শেষে সন্ধ্যায় আবার ফিরে আসতে পারব।’

এ বিষয়ে ফরিদপুর সহকারি স্টেশন মাস্টার সুজাত আলী সরদার বলেন, ‘সপ্তাহে শুক্রবার ব্যতীত ৬ দিন ট্রেনটি চলবে এবং ফরিদপুর স্টেশনে থামবে। এ বিষয়ে গতকাল রাতে আমরা নির্দেশনা পেয়েছি। সে অনুযায়ী আজ (৯ জুলাই) প্রথমবারের এখানে থেমেছে। ট্রেনটি প্রতিদিন রাজবাড়ী থেকে ছেড়ে ভোর ৫টা ৩৫ মিনিটে ফরিদপুর স্টেশনে এসে পৌঁছাবে এবং দুই মিনিট অবস্থান করে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। তবে, ফরিদপুর স্টেশন থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত টিকিট পাওয়া যাবে এবং ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ টাকা। এ ছাড়া ভাঙ্গায় গিয়ে নাম পরিবর্তন হওয়ার কারণে নতুন করে টিকিট কেটে নিতে হবে। একইভাবে ঢাকা থেকে সন্ধ্যা ৬টায় ছেড়ে আসবে এবং রাত ৮টায় ফরিদপুরে পৌঁছাবে।’

উল্লেখ্য, গত ৪ মে মাদারীপুরের শিবচরে এক অনুষ্ঠানে রাজবাড়ী-ভাঙ্গা-রাজবাড়ী রুটে ‘চন্দনা কমিউটার’ ও ভাঙ্গা-ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে ‘ভাঙ্গা এক্সপ্রেস’ নামে কমিউটার ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম। চন্দনা কমিউটার ফরিদপুর স্টেশন হয়ে যাচ্ছিল কিন্তু কোনো স্টপেজ না থাকায় মানববন্ধন, অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকি কাফনের কাপড় পরে তাঁরা ট্রেনটির গতিরোধ করেন। তাদের সেই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেন ফরিদপুরের বিশিষ্টজনেরা।’

(আরআর/এএস/জুলাই ০৯, ২০২৪)