সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি’র আওতায় কেন্দুয়া থেকে মদন জিসি ভায়া গোগ বাজার সড়কের কেন্দুয়া অংশের শুরুতে সাউদপাড়া মোড় হতে জামতলা পর্যন্ত ১ কিলোমিটার সড়ক এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। কেন্দুয়া অংশের ৫ কিলোমিটারের উপর সড়কটিতে খানাখন্দকে ভরা থাকলেও সড়কটি মেরামতে কর্তৃপক্ষের কোন নজর নেই। ফলে প্রতিদিনই ঘটছে নানান দূর্ঘটনা। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন মদন হতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জে বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ যানবাহন চলাচল করে। সড়কটিতে খানাখন্দকে ভরা থাকায় প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে কোন না কোন দূর্ঘটনা। ঘটছে হতাহতের ঘটনাও। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি এখন সড়ক নয়, পরিণত হয়েছে মরণ ফাঁদে। জরুরী সংস্কারের জন্য হাজারও জনতার দাবী উঠলেও কর্তৃপক্ষের হাতে বরাদ্দ না থাকায় সহসায় মেরামত হচ্ছে না।

জানা যায়, এলইজিডির আওতায় কেন্দুয়া থেকে মদন জিসি ভায়া গোগ বাজার সড়ক নং- ৩৭২৪৭২০০৪ ও ৫.৯২০ কিলোমিটার এই সড়কটি জরুরী মেরামতের দাবী উঠেছে। খানাখন্দক ও প্রায় স্থানে স্থানে গর্তে ভরা কাদা পানি মাড়িয়ে যানবাহন চলাচল করে। যানবাহন চলাচলের সময় সাধারণ যাত্রীরা আর এই সড়কে চলাচল করতে পারে না।

কেন্দুয়া পৌর এলাকার বাদে আঠারোবাড়ি মহল্লার বাসিন্দা শাহজাহান তালুকদার বলেন, আমাদের কপালই খারাপ। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে শত শত বাস, ট্রাক, সিএনজি ও অটোরিক্সা চলাচল করে। সাধারণ যাত্রী পরিবহণ ছাড়াও কৃষকের বিভিন্ন উৎপাদিত ফসল এই সড়ক পথে যানবাহনের মাধ্যমে কেন্দুয়া উপজেলা সদরসহ রাজধানী ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে পাঠানো হয়। কিন্তু কৃষকদের যেন দূর্দশার শেষ নেই। সড়কের বেহাল দশা থাকার কারণে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে পারছেন না। অপরদিকে গোগ বাজার বীজ পার হয়ে কাঞ্জিয়ার খাল এলাকায় রাতের বেলায় মানুষের যানমালের নিরাপত্তার অভাব দেখা দেয়। এখানে ঘটে দুর্ধষ ঘটনা। কিছুদিন আগেও ওই এলাকায় দুইজন মটর সাইকেল আরোহীকে বেধে পেলে রেখে তাদের টাকা পয়সা ও বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। কিন্তু সড়কটির বেহাল দশার কারণে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের পরিবহন নিয়ে জরুরীভাবে ঘটনাস্থলে সঠিক সময়ে পৌছাতে পারেন না। যার ফলে এই এলাকায় দিন দিনই অপরাধ প্রবণতা বেড়েই চলছে।

কান্দিউড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: মাহাবুব আলম বাবুল বলেন, সড়কটি এখন যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই ঘটছে বিভিন্ন দূূর্ঘটনা। তিনি এই সড়কটি জরুরী সংস্কারের জোর দাবী জানান। বাদেআঠারোবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ঠিকাদার রিপন চৌধুরী দাবী করে বলেন, এই সড়কটির বর্তমান অবস্থা খুবই নাজুক। এটি সড়ক নয় যেন মরণ ফাঁদ।

কান্দিউড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, পৌর এলাকার সাউদপাড়া মোড় থেকে জামতলা পর্যন্ত ১ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। দূর্ঘনার ভয়ে ওই সড়ক পথে যানবাহনে চলাচল করতে ভয় লাগে। তিনিও এই সড়কটি জরুরীভাবে মেরামতের দাবী জানান।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের সার্ভেয়ার মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা এই সড়কটি মেরামতের জন্য অগ্রাধিকার দিয়ে এলজিইডির নিবার্হী প্রকৌশলী নেত্রকোনার মাধ্যমে প্রধান প্রকৌশলী এলজিইডি বরাবর তালিকা পাঠিয়েছি। সেখান থেকে অনুমোদন পেলেই সড়কটির মেরামতের কাজ শুরু করা হবে। তবে জরুরী ভিত্তিতে অস্থায়ী মেরামত করে যানবাহন চলাচলের জন্য সুন্দর সুযোগ করে দিতে আমাদের হাতে এমন কোন বরাদ্দ নেই।

(এসবি/এসপি/জুলাই ০৮, ২০২৪)