রাজন্য রুহানি, জামালপুর : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় জামালপুরে ৩৪৭ স্কুলে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে ২৫৯টি প্রাথমিক ও ৮৮টি মাধ্যমিক স্কুল।

গত সপ্তাহ থেকে বন্যার পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তবে ক'দিন দিন ধরে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। উপদ্রুত এলাকায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানীয় সংকট দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে দুর্গত এলাকায় যে ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছে বানভাসীরা।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে ৭৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া জগন্নাথগঞ্জ ঘাট পয়েন্টে ১১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বন্যার পানি।

জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় জেলার ২৫৯টি প্রাথমিক ও ৮৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোফাজ্জল হোসেন খান বলেন, 'বন্যার কারণে ২৫৯ প্রাইমারি স্কুলে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ৮টি স্কুলে আশ্রয়ণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে ১১৬টি পরিবারের ৫১৭জন আশ্রয় নিয়েছেন।'

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মোজাম্মেল হাসান জানান, 'জেলার সরিষাবাড়ীতে ৯টি, মাদারগঞ্জে ৯টি, মেলান্দহে ১টি, ইসলামপুরে ২৯টি, দেওয়ানগঞ্জে ২৫টি, বকশীগঞ্জে ১৫টিসহ ৮৮টি স্কুলে বন্যার পানি উঠেছে। এর মধ্যে সরিষাবাড়ী ৯টি, মাদারগঞ্জে ১টি, ইসলামপুরে ২৯টি, দেওয়ানগঞ্জে ২৪টি ও বকশীগঞ্জে ১টি স্কুলে মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।'

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, 'জেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন প্রায় দুই লক্ষ মানুষ। বন্যাদুর্গতদের জন্য এ পর্যন্ত ৩৮০ মেট্রিক টন চাল ও ৬ লাখ টাকা এবং ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।'

জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান বলেন, 'বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের জন্য বরাদ্দের কোন ঘাটতি নেই।'

(আরআর/এসপি/জুলাই ০৮, ২০২৪)