ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। উপজেলার মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিদার হোসেনের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ।

তথ্য সুত্রে জানা যায়, ঘুষ বানিজ্য করে ক্রীড়া শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক বনে গেছেন দিদার। নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকেই প্রভাব খাটিয়ে আসছেন। এতে অন্যান্য সহকারী শিক্ষকেরা সর্বদায় ভয়ে থাকেন ও প্রতিবাদ করতে সাহস পাননা। তার স্বেচ্ছাচারিতায় বলি হয়েছেন দীর্ঘদিন ধরে অফিস সহায়ক হিসাবে কর্মরত সাহেব আলী। বর্তমানে তাকে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসাবে রেজুলেশন দিয়ে নিয়োগ চুড়ান্ত করেছেন এবং ওই পদে (অফিস সহায়ক) মোটা অংকের ঘুষবানিজ্য করে অন্যজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। সর্বশেষ সহকারী প্রধান শিক্ষক শূন্যপদে তার নিকটতম আত্মীয় শাখাওয়াত হোসেন নামে এক কলেজ শিক্ষককে মোটা টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে নিয়োগ দেয়। সেই শিক্ষক দুই ইনডেক্সধারী হিসাবে কলেজ ও স্কুলে শিক্ষকতা চালিয়ে যাচ্ছে এমন তথ্যটি চাওর হলে এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। কয়েকটি পত্রিকায় এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। শিক্ষক দিদারের এমন অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে এলাকাবাসী মানববন্ধনও করেন। পরে তড়িঘড়ি করে শিক্ষক দিদার নিজের চেয়ার বাঁচানোর জন্য নামমাত্র ওই শিক্ষককে মৌখিকভাবে বাতিল ঘোষণা করেন। বর্তমানে মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ মাসখানেক থাকলেও তফশীল ঘোষণায় গড়িমসী করছে। তার আগেই শুন্যপদ না করে শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে গোপনে বিজ্ঞাপন দিয়েছে। যা আইনগতভাবে পুরোপুরি অবৈধ বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, দিদার প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকেই একের পর এক নানা অনিয়ম করে যাচ্ছেন। তার উপর অতিষ্ঠ হয়ে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন। আবারও তড়িঘড়ি করে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। বিষয়টি আমরা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে জানিয়েছি। নির্বাচন আগে সম্পন্ন হবে, তারপর শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ। এর ব্যতয় ঘটলে আমরা এলাকাবাসী আবারও মানববন্ধন সহ কঠোর আন্দোলন করবো।

এ বিষয়ে মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দৌলত মন্ডল বলেন, চলতি কমিটির মেয়াদ মাসখানে আছে এটা সত্য। শিক্ষক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের নির্দেশমত হয়েছে। এখানে লুকোচুরির কিছুই নেই। তবে আইনগত বিষয়টি আমার জানা নেই।

এ অভিযোগের বিষয়ে মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিদার হোসেন মুঠোফোনে জানান, নিয়ম অনুয়ায়ী সবকিছু চলছে। এখানে কোন অনিয়ম দুর্নীতি হয়নি। এলাকার কিছু অসৎ মানুষ তাদের স্বার্থে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। এ সবকিছু মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।

শৈলকুপার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুলতান রহমান জানান, সার্কুলার গোপনে প্রকাশ করেছে কিনা তা আমি জানিনা। পদশূন্য না করে সার্কুলার প্রকাশ যা নিয়োগ বর্হিভূত। আইনগত বৈধতা নেই। অফিসিয়ালী যখন ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষক আমাকে জানাবে তখন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এসআই/এসপি/জুলাই ০৭, ২০২৪)