রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাদেরকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার ধোপাডাঙা গ্রামের আব্দুল গফফারের ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৭) ও একই গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে মিজানুর রহমান (৫৭)।

গ্রেপ্তারকৃত মিজানুর রহমান শুক্রবার সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম সালাহউদ্দিনের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা দেবহাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক নুরুস সালাম ছিদ্দিক জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৮ জুন জগনাœাথপুরের মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষের বাড়িতে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শুক্রবার সন্ধ্যার পর নিজ বাড়ি থেকে জাহাঙ্গীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমাণ্ড আবেদন জানানো হবে।

তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি থেকে মিজানুর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষের বাড়িতে ডাকতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজানুর রহমান ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে শুক্রবার বিচারিক হাকিম সালাহ্উদ্দিনের কাছে জবানবন্দি দিয়েছে। তার দেওয়া স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দি যাঁচাই বাছাই করা হচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষ জানান, জাহাঙ্গীর হোসেন ও মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি তাকে পুলিশ অবহিত করেছে।

প্রসঙ্গতঃ গত ২৭ জুন বৃহষ্পতিবার দিবাগত রাত দুটো থেকে শুক্রবার ভোর সোয়া চারটা পর্যন্ত ৬/৭ জনের একদল মুখোশ পরিহিত ডাকাত জগন্নাথপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষের পরিবারের সদস্যদের হাত, মুখ ও চোখ বেঁধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সিন্ধকি ও আলমারির তালা ভেঙে ৭ ভরি সোনার গহনা, সোয়া ৫ লাখ টাকা, একটি হাত ঘড়ি, দুটি মোবাইল ফোন, একটি ডাবল ব্যারেলের বন্ধুক ও একটি মটর সাইকেলসহ প্রায় ৩৬ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। পরদিন সকােেল বাড়ির ধানের গোলার পাশ থেকে ডাবল ব্যারেলের বন্দুক ও বৃহষ্পতিবার সকাল ৮টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙা ইউনিয়নের যোগরাজপুর গ্রামের নুর ইসলামের পাটখেত থেকে ডাকাতি হওয়া মটর সাইকেল (সাতক্ষীরা-হ-১৩-৫৬৬১) উদ্ধার করা হয়।

ডাকাতির ঘটনায় চালতেতলার আইয়ুব আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম কালুকে তার শ্বশুরবাড়ি শ্যামনগর উপজেলার সোরা গ্রাম থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তুলে আনা হয়। তিন রাত তাকে গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে আটক রেখে নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। পহেলা জুলাই সোমবার রাস সোয়া ৯টায় শরিফুল ইসলামকে শ্যামনগরের কৈখালি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ২ জুলাই তাকে আদালতে নিয়ে এসে সাত দিনের রিমাণ্ড আবেদন জানালে বিচারক মহিতুল ইসলাম দুই দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন। ৪ জুলাই তাকে রিমাণ্ড শেষে জেল হাজতে পাঠানো হয়। এনিয়ে সুভাষ ঘোষের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করলো।

(আরকে/এসপি/জুলাই ০৬, ২০২৪)