স্টাফ রিপোর্টার : সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চলচ্চিত্র পরিচালক তারেক মাসুদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানির জন্য আগামী মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দিন ধার্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

বুধবার (৩ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।

আদালতে আজ তারেক মাসুদের পরিবারের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন রমজান আলী শিকদার। বাস মালিকপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী।

এর আগে ৭ বছর পর গত বছরের ১১ অক্টোবর তারেক মাসুদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে বাস মালিকদের করা আপিলের শুনানি শুরু হয়। সর্বশেষ চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আপিল শুনানি মুলতবি করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটি শুনানির জন্য ওঠে।

২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ তারেক মাসুদের নিহতের ঘটনায় দায়ের করা ক্ষতিপূরণ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে বলা হয়, যারা এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী, মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য দায়ী, তাদের এখন চার কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫২ টাকা দিতে হবে তারেক মাসুদের পরিবারকে। গাড়ির চালক দেবেন ৩০ লাখ, তৃতীয়পক্ষের ক্ষতির জন্য ইনস্যুরেন্স মালিককে (রিলায়েন্স ইনস্যুরেন্স) দিতে হবে ৮০ হাজার টাকা এবং বাকি টাকা দেবেন বাস মালিকরা। এ টাকা দিতে হবে ছয় মাসের মধ্যে। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুপক্ষ।

২০১৬ সালের ১৩ মার্চ হাইকোর্টে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। সাক্ষ্যে তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ মোট ৭ কোটি ৭৬ লাখ ২৫ হাজার ৪৫২ টাকা ক্ষতিপূরণের কথা বলেন। আদালতে ক্যাথরিন মাসুদের পক্ষে সাতজন, বাস মালিক সমিতির পক্ষে পাঁচজন ও রিলায়েন্স ইনস্যুরেন্স কোম্পানির পক্ষে একজন সাক্ষ্য দেন।

২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ এবং এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হন। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে।

এরপর ২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নিহতদের পরিবারের সদস্যরা মানিকগঞ্জে মোটরযান অর্ডিন্যান্সের ১২৮ ধারায় বাস মালিক, চালক ও ইনস্যুরেন্স কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে দুটি মামলা করেন। সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে এ দুটি মামলা হাইকোর্টে বদলির নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করা হয়।

তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ এবং মিশুক মুনীরের স্ত্রী কানিজ এফ কাজী ও ছেলে সুহৃদ মুনীরের দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। এ রুলের শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর দুটি আবেদন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট।

এর মধ্যে তারেক মাসুদের মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। অন্য মামলাটি হাইকোর্টে বিচারাধীন।

(ওএস/এএস/জুলাই ০৩, ২০২৪)