মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বেপরোয়া অবৈধ বালুবোঝাই ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে ৮ বছর বয়সী শিশুকন্যাসহ দুজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা সম্পর্কে খালা ও বোনঝি বলে জানা গেছে। সোমবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় জানান, ঘটনার পর দুটি ট্রাক আটক করা হয়েছে এবং ওই দুটি ট্রাকের চালকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে সোমবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়নের পাত্রীকুল গ্রামের কাছে ভূনবীর-আথানগিরি সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়নের পশ্চিম পাত্রীকুল এলাকার মৃত কলিম উল্লার মেয়ে পিয়ারা বেগম (৫৫) মারা যান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পিয়ারা বেগমের বোনের মেয়ে একই ইউনিয়নের আলিসারকুল গ্রামের মৃত দুদু মিয়ার মেয়ে সাদিয়া আক্তার মুন্নিকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার নিয়ে আসার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। শিশু মুন্নি আলিসারকুল সরকারি প্রাইমারি বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ভূনবীর-শমসেরগঞ্জ সড়কে পিয়ারা বেগম ও তার বোনের মেয়ে সাদিয়া হেঁটে পাত্রীকুল যাচ্ছিলেন। এ সময় একটি ট্রাক অপরটিকে ওভারটেক করার সময় সড়কের পাশে পিয়ারা ও সাদিয়াকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে পিয়ারা বেগম নিহত হন। সাদিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনার পরে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করার দাবিতে এলাকাবাসী লাশ নিয়ে ওই সড়ক রাত ১০টা পর্যন্ত অবরোধ করে প্রতিবাদ করতে থাকেন। পরবর্তীতে শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু তালেব ও থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. আমিনুল ইসলাম ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু তালেব মঙ্গলবার বিকেলে মুঠোফোনে জানান, ঘটনাটি খুবই হৃদয়বিদারক। এ ঘটনাকে সামনে রেখে প্রশাসন অবৈধ বালু উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধে অভিযান অব্যাহত রাখবে এবং আমরা হার্ডলাইনে থাকব। তিনি আরও বলেন, আমি জোর দিয়ে বলতে পারি অবৈধ বালু উত্তোলনের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই।

(একে/এসপি/জুলাই ০২, ২০২৪)