শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরে একটি মাদ্রাসায় এক শিশু শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে রবিউল ইসলাম (২৮) নামে মাদ্রাসার এক শিক্ষককে বিক্ষুব্ধ জনতা গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিয়েছে।

এ ঘটনায় বলাৎকারের শিকার শিশুটির পিতা বাদশা মিয়া বাদী মঙ্গলবার ( ০১ জুলাই) রাত সাড়ে ১১ টায় দিনাজপুর কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

এ ঘটনা নিশ্চিত করেছেন, দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শেখ জিন্নাহ আল মামুন।

তিনি বলেন, সোমবার বেলা সাড়ে ১২ টায় শহরের পাক-পাহারপুর ঠোঙ্গাপট্রি এলাকায় 'তা'মীরুল উম্মাহ' নামে মাদ্রাসায় এই ঘটনা ঘটে। প্রতিদিনের মতো ভিকটিম মোঃ কামরান হোসেন ওরফে নোমান (৮) সকাল ৮ টায় তা’মীরুল উম্মাহ্ মাদ্রাসায় যায়। সে মাদ্রাসার ২য় শ্রেনীতে অধ্যায়নরত অনাবাসিক ছাত্র। দুপুর অনুমান সাড়ে ১২ টার সময় উক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক আসামী মোঃ রবিউল ইসলাম (২৮) তার ৪র্থ তলার শয়ন কক্ষে ভিকটিমকে কৌশলে ডেকে নিয়ে যায়। শিশু নোমানের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পরিধেয় পাঞ্জাবী ও পায়জামা খুলে জোরপূর্বক বলাৎকার করে।

এ কারণে ভিকটিমের পায়ুপথ ফেটে গিয়ে রক্ত নির্গত হলে উক্ত বিষয়ে কাউকে কোন কিছু না বলার জন্য মাদ্রাসা হতে বের করে দেওয়ার ভয়ভীতি ও হুমকী প্রদর্শন করে।

ভিকটিম নিজ বাড়ীতে গেলে তার মা পায়ুপথে রক্ত নির্গত হতে দেখে পাহাড়পুরস্থ লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা গ্রহন করার ছেলের। পরে ঘটনার বিষয়টি ভিকটিমের পরিবার মাদ্রাসায় উপস্থিত হয়ে ঘটনার সত্যতা যাচাই করে নিশ্চত হয়। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে অভিযুক্ত শিক্ষক রবিউলকে এলোপাতাড়ীভাবে মারপিট করে। সন্ধ্যায় জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ ফোন হতে পুলিশ ঘটনা জানতে পারে। স্থানীয় লোকজন পরে অভিযুক্তকে পুলিশে সোপর্দ করে।

ভিকটিমের নোমানেরশারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য এম আব্দুর রহিম কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভিকটিম নোমান শহরের পুরাতন বাহাদুর বাজার পোস্ট অফিস গলি এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে।
অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক রবিউল ইসলাম রবির দিনাজপুর ৫নং উপশহর এলাকায় বাবুল ওরফে বাবুলের ছেলে। বিক্ষুব্ধ জনতার তোপের মুখে গণধোলাইয়ের শিকার অভিযুক্ত শিক্ষক রবিউলকে পুলিশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
পরে রাতে ভিকটিমের পিতা বাদশা বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।'

সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসার পরিচালক মাসুদ রানা, ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে জানান, দুপুরের পর মাদ্রাসায় এসে বিষয়টি জানাতে পারি। জানার পর ভিকটিম শিক্ষার্থীর কাছে গেলে সে ঘটনা জানান।পরীক্ষা করে প্রমাণও পাই। পরে এলাকাবাসী জেনে মাদ্রাসা ঘেরাও করে অভিযুক্ত শিক্ষক রবিউলকে গণধোলাই দেয়। আমি বাধ্য হয়ে বিষয়টি থানায় অবগত করি।'

(এসএএস/এএস/জুলাই ০২, ২০২৪)