চাটমোহর প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রাম থেকে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

শুক্রবার (০৭ জুন) সকাল দশটার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের দাবি, তাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে তার শ্বশুড়বাড়ির লোকজন।

মৃত গৃহবধূ মিনা খাতুন ওই গ্রামের সোহাগ হোসেনের স্ত্রী এবং একই উপজেলার দাঁথিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে।

এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্র জানায়, উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে সোহাগ হোসেনের সাথে ১১ মাস আগে বিয়ে হয় মিনা খাতুনের। বিয়ের পর সোহাগের পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

শুক্রবার ভোররাত তিনটার দিকে সোহাগের পিতা আনোয়ার হোসেন মিনার বাবা-মাকে গিয়ে জানায় তাদের মেয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তারা তাৎক্ষনিক মেয়ের স্বামীর বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান মিনা খাতুনের মরদেহ ঘরের মেঝেতে শোয়ানো অবস্থায় আছে।

মিনা খাতুনের মা আনজুয়ারা খাতুন অভিযোগ করেন, আমি মেয়ের শ্বশুড় বাড়িতে গিয়ে দেখি মেয়ের লাশ ঘরের মেঝেতে শোয়ানো আছে। বাড়ির লোকজন একবার বলে মেয়েটা খাটের সাথে গলায় ফাঁস নিছে, আরেকবার বলে ঘরের ডাবের সাথে গলায় ফাঁস নিছে। বিষয়টা রহস্যজনক মনে হচ্ছে৷

তিনি আরো জানান, বিয়ের পর আমার মেয়ের কাছে শুনেছি, জামাই তার এক বেয়াইনের সাথে পরকীয়া প্রেম করে। তার মোবাইল ফোনে ওই মেয়ের সাথে জামাইয়ের ঘনিষ্ট ছবি ছিল। আমার মেয়ের সামনে ফোনে বেয়াইনের সাথে কথা বলতো সোহাগ। সেটা নিয়ে মেয়ের সাথে জামাইয়ের মাঝে মধ্যে ঝগড়া হতো। মারধর করতো। আমার মেয়েকে মেরে ফেলে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে। আমার মেয়ের মৃত্যুর বিচার চাই।

মিনা খাতুনের স্বামী সোহাগ হোসেন বলেন, আমার কারো সাথে প্রেমের সম্পর্ক নেই। এসব মিথ্যা কথা। রাতে খাবার নিয়ে একটু ঝগড়া হয়েছিল। পরে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। রাত তিনটার দিকে ঘড়ির অ্যালার্ম শুনে ঘুম থেকে জেগে দেখি ডাবের সাথে গলায় ফাঁস নিয়ে ঝুলছে মিনা। কেন সে আত্মহত্যা করেছে তা বুঝতে পারছি না।

এ বিষয়ে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। প্রাথমিকভাবে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পাবার পর জানা যাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা।

(এসএইচ/এসপি/জুন ০৭, ২০২৪)