স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যশোর : যশোরে তামাককে লাল কার্ড প্রদর্শন ও তামাক পরিহারের শপথ নিয়েছে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে যশোর জেলা প্রশাসকের কালেক্টরেট চত্বরে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসে তামাকে লাল কার্ড প্রদর্শন ও শপথ নেন শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে নিজ নিজ পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন করার অঙ্গীকার করেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার তামাকের বিরুদ্ধে এসব শিক্ষার্থীদের শপথপত্র পাঠ করান। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, 'তামাক অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্ষতিকারক। তামাকের পরিবর্তে অন্য ফসল ফলালে দেশ এবং কৃষক উভয়ই লাভবান হবে। তামাক উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সেবন প্রতিটি ক্ষেত্রেই পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য এবং অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন দুইই ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী নেশা। তামাক সেবনে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, ক্রণিক লাং ডিজিজসহ বিভিন্ন মারাত্মক অসংক্রামক রোগ দেখা দেয় যার পরিনাম মৃত্যু। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তামাক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করতে হবে। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকবে হবে।'

অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক রাসেল বলেন, 'বাংলাদেশের পরিবেশ, অর্থনীতি এবং সমাজের ওপর তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব ব্যাপক। বিশ্বের মোট তামাকের ১ দশমিক ৩ শতাংশ উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। আমাদের দেশে আবাদযোগ্য জমিতে তামাক চাষের কারণে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে রয়েছে। কারণ যে জমিতে তামাক উৎপাদন করা হয় সেখানে অন্য কোনো ফসল আর উৎপাদন করা যায় না। তাই কৃষকদের তামাক চাষ পরিহার করতে উদ্ধুদ্ধ করতে হবে।'

এর আগে 'তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ প্রতিহত করি, শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করি" প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসের শুরু হয়। জেলা প্রশাসন ও তামাক নিয়ন্ত্রণ বাস্তবায়ন জেলা টাস্কফোর্সের আয়োজনে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে দিবসের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথিসহ অতিথিবৃন্দরা। অনুষ্ঠানে তামাকজাত পণ্য সিগারেটের একটি প্রতীকী শলাকা কেটে তামাকজাত পণ্য পরিহার করার ঘোষণা দেন। শেষে তামাক বিরোধী শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটিতে শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সরকারি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেয়। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে কালেক্টরেট চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

(এসএম/এএস/মে ৩১, ২০২৪)