রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, সদর উপজেলায় যত নদনদী, খালবিল, জলাশয় আছে, আমরা সবগুলোই দখল ও দূষণমুক্ত করবো। আজ আমরা নিজহাতে গবাখাল দখল ও দূষণমুক্ত অভিযানে নেমেছি। একে একে সব জলাশয়কে তার আপন রূপে ফিরিয়ে নিতে আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা রয়েছে।

তিনি বলেন, শুধু গবাখাল নয়, বংশখাল, বানিয়াবাজার খালসহ সবগুলো উদ্ধার ও দূষণমুক্ত করবো ইনশাল্লাহ। বঙ্গবন্ধুর 'দাবায়ে রাখতে পারবা না' এই উক্তির শক্তি নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

জামালপুর শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে 'গ্রিন জামালপুর, ক্লিন জামালপুর' প্রকল্পে গবাখাল দখল ও দূষণমুক্ত এবং পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্বোধন করতে গিয়ে সদর আসনের সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা পরিবেশ উন্নয়নে বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা জামালপুরকে পরিচ্ছন্ন এবং সবুজায়ন করার উদ্যোগ নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাতেকলমে কাজ করে দেখান। আমরা তাঁর পথ ধরে শুধু কথাই না, কাজ করার চেষ্টা করছি।

শুক্রবার (৩১ মে) সকাল ৭টা থেকে গবাখালের সূচনাস্থল জামালপুর পৌরসভার শেখের ভিটা থেকে শুরু হয় পরিচ্ছন্নতা অভিযান। শেখেরভিটা, মনিরাজপুর, জিয়া কলেজ, ফুলবাড়িয়া সিংড়ি বিল, স্লুুইস গেটসহ পাঁচটি স্থানে একযোগে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ।

এ সময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ও সরাসরি পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে অংশ নেন জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান, পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বিপিএম, জামালপুর পৌরসভার মেয়র ছানোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জামালপুর সদর উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান বিজন কুৃমার চন্দ, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুম রেজা রহিম, জামালপুর পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিমসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, পৌরসভার কাউন্সিলরগণ, সরকারি, বেসরকারি সংস্থার কর্মী, স্থানীয় উদয়ন ক্লাব, যুগবাণী সামাজিক, সাংস্কৃতি সংস্থা, উন্নয়ন সংঘ এবং পৌরএলাকার শত শত মানুষ।

উল্লেখ, ১৯৬০/৬১ সালে জামালপুর শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন, কৃষি আবাদের জন্য সেচ ব্যবস্থা এবং মাছের অভয়াশ্রম গড়ে তোলার লক্ষে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসন ও জামালপুর পৌরসভার যৌথ উদ্যোগে টাকার বিনিময়ে কাজ প্রকল্পের আওতায় ১২ কিলোমিটা দৈর্ঘ এবং ৩০ ফুট প্রস্থ খালটি খনন করা হয়। জামালপুর শহরের শেখেরভিটা থেকে কেন্দুয়া কালিবাড়ি ইউনিয়নের বাজার সংলগ্ন ঝিনাই নদীর সাথে সংযুক্ত করা হয়। এ খালে একসময় প্রচুর মাছ পাওয়া যেতো। কৃষকদের কাছে গবাখাল ছিল আশির্বাদ স্বরূপ। সময়ের বিবর্তনে এবং স্বার্থান্ধ ও লোভী মানুষের আগ্রাসনের ফলে খালটি দখল, ভরাট এবং আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়। ফলে বর্ষা মৌসুমে শহরের জলাবদ্ধতায় পৌরবাসীর ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করে। এ দুর্ভোগ থেকে রক্ষায় সদর আসনের সংসদ সদস্য খাল পরিচ্ছন্নতা ও দখলমুক্ত করার ডাক দেন। জেলা প্রশাসন ও জামালপুর পৌরসভার উদ্যোগে শুক্রবার পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়। সংসদ সদস্যের ডাকে সাড়া দেন বিপুল সংখ্যক মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দা বিশিষ্ট রাজনীতিক আমির উদ্দিন বলেন, নিয়মিত ফলোআপ বা তদারকি না থাকলে আজকের অভিযান লোকদেখানো হবে মাত্র। দূষণমুক্ত পরিবেশের জন্য এ ধরণের শুভ উদ্যোগের ধারবাহিকতা থাকলে সুন্দর একটি নগর গড়ে উঠবে। মানুষের বসবাসযোগ্য ও পরিবেশ সম্মত নগর প্রতিষ্ঠায় এমপি সাহেবের এ উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে।

(আরআর/এসপি/মে ৩১, ২০২৪)