স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফেরাতে আবার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সরকার প্রধান শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের পর, তারেককে ফেরানো নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। খোঁজা হচ্ছে আইনি প্রক্রিয়া। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কাউকে ফিরিয়ে আনতে হবে না, তারেক নিজেই দেশে ফিরবেন।

গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করা তার সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। গণভবনে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, এখন একটাই কাজ, ওই কুলাঙ্গারটাকে (তারেক রহমান) নিয়ে আসা। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা ও গ্রেনেড হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন; সেজন্য আমরা নিয়ে আসব। ব্রিটিশ গভর্নমেন্টের কাছে আমরা সেই আবেদন করব যে, ওখান থেকে যেন সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। তাকে নিয়ে এসে এ দেশে তার সাজাটা বাস্তবায়ন করতে হবে।

তারেক রহমানকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে ২০০৮ সালে এপ্রিলে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তারেক রহমান ২০০৮ সাল থেকে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্রেপ্তার হবার পর জামিন পেয়ে তিনি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য যান। দীর্ঘ সময় পর ২০১৩ সালের মে মাস থেকে লন্ডনে তিনি একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেন। তারেক রহমান দুটি মামলায় কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। এর একটি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা, অপরটি মুদ্রাপাচার মামলা।

এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, আইন-কানুন ভালোভাবে জেনে ব্রিটিশ সরকারের কাছে অনুরোধ করা হবে যে, তারেক রহমান বাংলাদেশের সাজাপ্রাপ্ত ও দণ্ডিত ব্যক্তি, তাকে দণ্ড ভোগ বা আদালতের আদেশ মানার জন্য বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হোক।

কী প্রক্রিয়ায় তারেককে দেশে ফেরানো যাবে এবং ব্রিটেনের আইনে কি বলা হয়েছে- তা ব্যাখ্যা করেছেন ইংল্যান্ডে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ ইকবাল । তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়ার প্রথমটি হলো যদি কোন সরকার ব্রিটিশ হোম অফিস বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক্সট্রাডিশনের আবেদন পাঠায় তাহলে ব্রিটেনের ২০০৩ সালের এক্সট্রাডিশন আইন আলোকে করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এক্ষেত্রে গ্রেফতারের পরোয়ানা দেয়া হবে আদালতের মাধ্যমে। আদালত দেখবে যে এক্ষেত্রে কোন আইনি বাধা আছে কিনা। এর একটি হলো- যে অপরাধের জন্য তাকে বাংলাদেশে নেয়া হবে তার জন্য তার মৃত্যুদণ্ড হতে পারে কিনা।

তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয়টি হলো যে সাজার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হবে- তার বাইরে অন্য কোনো সাজা যেন না হয়। তৃতীয়টি হলো এক্সট্রাডিশন অর্থাৎ বিচারের জন্য প্রত্যর্পিত হবার মতো কোনো অপরাধ তিনি করেছেন কিনা। তাছাড়াও তারা যদি মনে করেন যে এতে মানবাধিকারের লঙ্ঘন হচ্ছে, বা রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলকভাবে তাকে নেয়া হচ্ছে, তাহলে তারা জুডিশিয়াল রিভিউর মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন।

তারেক রহমানকে ফেরানোর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা জেলা বিএনপির মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, কাউকে ফিরিয়ে আনতে হবে না, তারেক রহমান নিজেই দেশে ফিরবেন।

(ওএস/এসপি/মে ৩০, ২০২৪)