রিয়াজুল করিম, রাজবাড়ী : ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব রাজবাড়ীতেও। ২৬ মে দিনগত মাঝ রাত হতে শুরু হয় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাস। দমকা বাতাসের তাণ্ডবে মাঝরাতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। গাছপালা ভেঙে ইন্টারনেটের, ডিস লাইনের ও বিদ্যুতের তারের উপর পড়ে। বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট ও ডিস লাইনের তার ছিড়ে পড়ে। এতে করে কোন এলাকায় দু'দিন আবার কোন এলাকায় তিন দিন ধরে ভোগান্তিতে পড়ে জনসাধারণ। রাত শেষে দিনের শুরুতেই মোবাইল ও ব্যাটারি চালিত যানবাহন অচল হয়ে পড়ে, মোবাইলে কথা বলা ও যাতায়াতের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় শ্রমিকের কাজ-কর্ম, দরিদ্র মানুষদের ও তাদের গবাদিপশুর খাদ্য সংকটে প্রভাব পড়ে।

এদিকে, ২৭ মে রাত ৮.টার দিকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে রাজবাড়ী পল্লী বিদ্যুত অফিস সূত্রে জানা যায়; বিভিন্ন এলাকায় গাছ উপরে ও গাছের ডাল পালা ভেঙে বিদ্যুৎতের তারের উপর পড়েছে, সেগুলো পরিষ্কার না করা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব না।

পরবর্তীতে, পিডিবির আওতাধীন এলাকায় ২৮ মে দুপুর হতে বিদ্যুৎ চালু হলেও, পল্লী বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে কোন কোন অঞ্চলে সন্ধ্যায় আবার কোন কোন এলাকায় রাত ১০/১১ টার দিকে। রাজবাড়ীর আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের মানুষ পল্লি বিদ্যুৎ পেয়েছেন রাত ১১ টার দিকে। বিদ্যুৎ চালু হলেও এখনো অনেক এলাকায় ইন্টারনেটের তার সংযোগ দিতে পারেনি। যার কারণে অনেক এলাকায় ব্রডব্যান্ডের লাইন চালু হয়নি।

তবে ব্রডব্যান্ড ব্যবসায়ী মিলন জানান, ঝড়ের কারণে আমাদের অনেক ইন্টারনেট ও ডিস লাইনে তার ছিড়ে গেছে, এতে আমার অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে। আজ বেশ কিছু এলাকা সংযোগ দিতে পেরেছি, যে সকল এলাকায় এখনও ঠিক করতে পারিনি আগামীকাল ইনশাল্লাহ সে লাইনগুলো ঠিক হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।

ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা হাসি বেগম বলেন, আমাদের গ্রামে ৬ দিন বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত ছিলাম। প্রথম দিকে গাছ-পালা পরিষ্কার অভিযানের জন্য ২৩ ও ২৪ মে সকাল ৮ টা হতে ৫ টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিলনা, ২৫ মে সকাল ৮ হতে রাত ৮টা পর্যন্ত বিদ্যৃৎ ছিলোনা। এরপর আবার ঝড়ের কারণে ২৬ তারিখ রাত ১১টা হতে ২৮ তারিখ প্রায় রাত ১১টা পর্যন্ত বিদ্যুত ছিলনা। পরে রাত ১১টার পর থেকে বিদ্যুৎ পেয়েছি। এভাবে প্রায় ৬ দিন আমরা বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত ছিলাম। বিদ্যুৎ না থাকায় পোলাপান নিয়ে গরমে ঘুমাতে পারিনি, রাতের বেলায় অন্ধকারে রান্নািবান্না ও চলাফেরা করতে খুবই কষ্ট হয়েছে, আবার মোবাইল বন্ধ থাকায় কারো সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে দম বন্ধ হয়ে আসছিল, যাতায়াতের জন্য যানবাহনও পাওয়া যায়নি। বিদ্যুৎ না থাকলে যে কি জ্বালা, সেটা হারে হারে উপলব্ধি করতে পেরেছি।

(আরকে/এসপি/মে ২৯, ২০২৪)