সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : জমি নিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে বিরোধের ঘটনা চরমে পৌছেছে। পাকা ধান কাটতে গেলে এক ভাই তার দলবল নিয়ে আরেক ভাইকে ধান কাটতে বাধা দিয়েছে। এমকি দেওয়া হয়েছে প্রাণ নাশের হুমকিও। 

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাহেদ মিয়া ও তার ছেলেরা জমিতে পাকা ধান কাটতে গেলে তার সৎ ভাই গিয়াস উদ্দিন ও রহিছ উদ্দিনের লোকজন লাঠি বল্লম নিয়ে জাহেদ মিয়া ও তার ছেলেদেরকে ধান কাটতে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে দু-পক্ষের লোকজন মুখোমুখি হলে গন্যমান্য ব্যক্তিরা পরিস্থিতি সামলে দেন। তবে জমির বিরোধ নিয়ে এই দুই পরিবারের মধ্যে যে কোন সময় সংঘর্ষে প্রাণ হানির আশংকা করছেন গ্রামের সাধারন লোকজন।

কেন্দুয়া উপজেলার ৮ নং বলাইশিমুল ইউনিয়নের বলাইশিমুল মাইজপাড়া গ্রামের মৃত নূর আলী বেপারীর ছেলে জাহেদ মিয়া ও গিয়াস উদ্দিন। জমি নিয়ে বিরোধ জাহেদ মিয়ার সৎ ভাই গিয়াস উদ্দিন ও রহিছ উদ্দিনের সাথে। জাহেদ মিয়ার দাবি বিগত ২০১৩ সালে গিয়াস উদ্দিন ও রহিছ উদ্দিনের নিকট থেকে রেজিষ্ট্রি মূলে ১০১ খতিয়ানের ৮৭০ দাগের সাড়ে ২২ ও ১৫২ খতিয়ানের ৮৭০ দাগের ৫ শতাংশ জমি সহ মোট সাড়ে ২৭ শতাংশ জমি খরিদ করেন। দীর্ঘদিন ঐ জমি তিনি এবং তার ছেলেরা ভোগ দখল করে ফসল উৎপাদন করে আসছেন। সম্প্রতি পাড়া দূর্গাপুর মৌজার ১০৪ খতিয়ানের ৮৭০ দাগের ১৫.৯ শতাংশ জমির একাংশে একটি আধা পাকা ঘর তৈরির কাজ শুরু করেন গিয়াস উদ্দিন ও রহিছ উদ্দিন।

গিয়াস উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, আমি আমার জমিতে বসতঘর তৈরির কাজ শুরু করেছি। কিন্ত আমার সৎ ভাই জাহেদ মিয়া ও তার ছেলেরা আমাকে ঘর তৈরির কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। আদালতে মামলাও করেছে। যে কারণে আমি বসতঘর ঘর তৈরির কাজ করতে পারছি না। পাকা ধান কাটতে বাধা দিচ্ছেন কেন? জানতে চাইলে গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমার জমিতে ধান কাটতে গেলে বাধাতো দিবই।

অপর দিকে জাহেদ মিয়ার অভিযোগ, যে জমিতে পাকা ধান কাটতে বাধা দিয়েছে সেই জমি আরও কয়েক বছর আগে রেজিষ্ট্রি মূলে আমার কাছে বিক্রি করেছে গিয়াস উদ্দিন ও রহিছ উদ্দিন। আমার কাছে জমির দলিলও আছে, খাজনা খারীজেরও কাগজ আছে। আমি থানায় অভিযোগ করার পর থানার পুলিশ দুই পক্ষকেই ডেকেছিলেন। আমি পুলিশকে কাগজ দেখাতে পারলেও তারা কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। পরে পুলিশ আমাকে ধান কাটতে কোন বাধা নেই বলে জানিয়েছে। তবে গিয়াস উদ্দিন ও রহিছ উদ্দিন শুধু প্রাণ নাশের হুমকিই দিচ্ছে না তারা আমাদের বিরোদ্ধে আদালতে গরু নেওয়ার অভিযোগে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।

এ ব্যাপারে কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: এনামুল হক পিপিএমের সাথে যোগাযোগ করা হলে মঙ্গলবার তিনি জানান, যে জমিটিতে পাকা ধান কাটতে দেওয়া হচ্ছে না সেই জমিটি রোপন করেছিলেন জাহেদ মিয়া। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের নিয়ে বসেছিলাম কিন্তু কোন পক্ষই মালিকানার কাগজপত্র পরিষ্কার ভাবে উপস্থাপন করতে পারেনি। তবে গিয়াস উদ্দিনের কয়েকটি গরু জোর করে নেওয়ার অভিযোগে জাহেদ মিয়া ও তার ছেলেদের বিরোদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। বিষয়টি এভাবেই আছে।

(এসবি/এসপি/মে ২৮, ২০২৪)