ট্রাম্পের মামলার রায় এ সপ্তাহে, ট্রাম্প কি খালাস পাচ্ছেন?
![](https://www.u71news.com/article_images/2024/05/28/shitangshu-guh.png)
শিতাংশু গুহ
নিউইয়র্কে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার রায় যেকোন দিন হতে পারে, এমনকি এ সপ্তাহে। রাষ্ট্রপক্ষ ও ট্রাম্পপক্ষ ইতিমধ্যে তাদের সাক্ষ্য-প্রমান, কার্যবিধি শেষ করেছেন। মঙ্গলবার (২৮ মে) উভয়পক্ষ সমাপনী বক্তব্য পেশ করবেন। এরপর মামলাটি ভাগ্য নির্ধারণের জন্যে জুরীদের হাতে যাবে। ১২ জন জুরি সর্বসম্মতভাবে ট্রাম্পকে দোষী বা নির্দোষ ঘোষণা করবেন, একমত না হলে ‘হ্যাং-জুরি’ হবে। ট্রাম্প নির্দোষ হলে বিচারক তাকে দায়মুক্তি দেবেন, জুরি ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করলে বিচারক চূড়ান্ত রায়ে তার শাস্তির মেয়াদ নির্ধারণ করবেন, সেক্ষেত্রে বিচারক পুনরায় উভয় পক্ষের কাছে ‘শাস্তির পরিমান’ জানতে চাইবেন। জুরিগণ মামলাটি কতদিন তাদের কাছে রাখবেন, সেটিও বিচার্য। হ্যাং-জুরি হলে রাষ্ট্রপক্ষ পুনরায় বিচার করতে পারেন, আবার নাও করতে পারেন।
ট্রাম্প কি দোষী সাব্যস্ত হচ্ছেন, না খালাস পাচ্ছেন? মিডিয়ায় আইন বিশেষজ্ঞরা এটি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন। অনেকের বক্তব্য ট্রাম্প খালাস পাচ্ছেন। কেউ বলছেন, তিনি দোষী সাব্যস্ত হবেন। এমনিতে মামলাটি যথেষ্ট দুর্বল, তদুপরি রাষ্ট্রপক্ষে সর্বশেষ সাক্ষীর বক্তব্য ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করতে যথেষ্ট নয় বলে আইন বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করছেন। অন্যপক্ষ বলছেন, একজন সাক্ষীর বক্তব্যই সবকিছু নয়, সরকারি কৌঁসুলি যথেষ্ট দক্ষতার সাথে মামলাটি সাজিয়েছেন, ট্রাম্প ছাড়া পাচ্ছেন না। এই মামলায় ট্রাম্পের সর্বোচ্চ ৪বছরের কারাদন্ড হতে পারে; সর্বনিন্ম প্রবেশন। দোষী সাব্যস্ত হলে এটি হবে তার প্রথম অপরাধ, সেক্ষেত্রে জেল হবার সম্ভবনা কম, যদিও এটি হবে মার্কিন ইতিহাসে কোন একজন প্রেসিডেন্ট যিনি ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত হলেন।
দোষী হলে ট্রাম্প কি নির্বাচন করতে পারবেন? পারবেন, এতে আইনগত কোন বাধা নেই। ভোটাররা কি ট্রাম্পকে সমর্থন করবে? ট্রাম্পের ভোটাররা মনে করছেন, ট্রাম্পকে ফাঁসানো হচ্ছে, তাই ভোট কমে যাবার সম্ভবনা নেই, তবে খেলাস পেলে ভোট বেড়ে যেতে পারে। ট্রাম্প এ মামলায় সাক্ষ্য দেননি। রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলায় প্রধান সাক্ষী ছিলেন একদা ট্রাম্পের এটর্নি মাইকেল কোহেন, যিনি পর্ণষ্টার স্টরমী ড্যানিয়েলকে মুখবন্ধ রাখার জন্যে ১৩০হাজার ডলার দিয়েছিলেন। কোহেন একজন দণ্ডিত আসামী, ট্রাম্পপক্ষ চেষ্টা করেছে তাঁর বক্তব্যের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করতে। তারা কিছুটা সফল হয়েছেন যখন কোহেন স্বীকার করতে বাধ্য হ’ন যে, তিনি ট্রাম্পের ব্যবসা থেকে ৩০হাজার ডলার চুরি করেছিলেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের পক্ষে কোন এক মহিলাকে টাকাটা দিতেই তিনি এ কর্মটি করেন।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কোহেনের এ বক্তব্যটি ‘বুমেরাং’ হয়েছে। এরআগে মডেল স্টরমী ড্যানিয়েল যথেষ্ট খোলামেলা ভাবে ট্রাম্পের সাথে তাঁর সম্পর্কের বর্ণনা করেন, যা ‘অতিরিক্ত’ হয়েছে বলে মিডিয়া মন্তব্য করেছে। যাই হোক, এখন শুধু অপেক্ষার পালা। ট্রাম্প কিন্তু থিম নেই, নিউইয়র্কে তিনি বিশাল সমাবেশ করেছেন, যা রিপাবলিকানদের জন্যে অভাবনীয়, কারণ নিউইয়র্ক পুরোপুরি ডেমক্রেট ষ্টেট। নিউজার্সিতে একই সময়ে এক সমাবেশে তিনি বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে বর্ডার বন্ধ করে দেবেন, এবং অবৈধ ইমিগ্র্যান্টকে বের করে দেবেন। ইমিগ্রেশন প্রশ্নে ট্রাম্পের কঠোর অবস্থান এ সময়ে মার্কিন ভোটার ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন। ব্যাটেলগ্রাউন্ড ষ্টেটগুলোতে ট্রাম্পের অবস্থান বাইডেনের চেয়ে যথেষ্ট ভালো এবং তা প্রতিদিন ভালো হচ্ছে।
লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।