উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : রেমালের প্রচন্ড ঝড়বৃষ্টির মধ্যে গভীর রাতে দুর্বত্তরা বসত ঘরে ডুকে  দাদি, নাতি ও নাতিনকে কুপিয়েছে। পরে লোকজন খবর পেযে ওই ঘরে উপস্থিত হয়ে দাদি হামিদুনেছা  (৭০) মৃত ও নাতি আরাফাত (১২) ও নাতনি  হালিমা (১৫) গুরুতর আহত অবস্থায় দেখতে পায়। তবে ঘটনাস্থলে প্রান হারান দাদী।  এ ঘটনায় সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে পিবিআই তদন্ত টিম ঘটনাস্থলে পোঁছেছে। এর পরেই হামিদুনেচার লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হবে।

এ সময় আহতদের উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে নাতি আরাফাত হোসেনকে (১২) মৃত ঘোষণা করেন এবং নাতিন হালিমাকে (১৫) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে রেপার করেন। হালিমার শারিরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। ২৭ মে রবিবার দিবাগত রাতে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ইউনিয়ন পশ্চিম রাধাসার বকাউল বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে। হত্যার শিকার হামিদুনেছা ঐ বাড়ির সিরাজ বকাউলের স্ত্রী নিহত আরাফাত ও আহত হালিমা ওই বাড়ির প্রবাসী ইউসুফের সন্তান। আরাফাত শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং হালিমা একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং নিহত হামিদা বেগম হলেন ইউসুফের মা।

পাশের খাঁন বাড়ির ইউসুফ জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে নিহত আরাফাতের মা শাহিন আমাকে ফোন করে তাদের বাড়ীতে ডাকাত ঢুকছে, অনেককে কুপিয়েছে বলে ফোন করে। পরে স্থানীয় মসজিদের মাইকে বকাউল বাড়ীতে ডাকাত ঢুকেছে বলে প্রচার করা হয়। পরে আমিসহ কয়েকজন ওই বাড়ীতে যাই।

তিনি আরো বলেন ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি প্রবাসি ইউসুফের মায়ের মৃতদেহ খাটের উপর পড়ে আছে। তার ছেলে আরাফাত ও মেয়ে হালিমা নিচে আহত অবস্থায় নিচে পড়ে আছে। পরে মসজিদের ইমাম ও অন্যদের সহযোগিতায় আহতদের কাঁধে করে রাস্তায় এনে পাশের বাড়ী থেকে অটো নিয়ে হাসপাতালে আসি।

তিনি জানান, হাসপাতালে আসার পথেই আরাফাত মারা যায়। পরে হাসপাতাল এলে ডাক্তার আরাফাতকে মৃত ঘোষণা করেন এবং হালিমাকে কুমিল্লায় রেফার করা হয়। শুনেছি সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে রেফার করা হয়েছে। তার পিঠে ও বুকে কোপ দেয়া হয়েছে।

আহতদের বহনকারী অটো চালক জহির জানান, রাতে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। তখন রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার পরে হবে। আমার বাড়ীতে আহত আরাফাত ও তার বোন হালিমাকে নিয়ে আসে স্থানীয়রা। পরে আমার ব্যাটারী চালিত অটোরিকশায় করে তাদেরকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি।

একই বাড়ীর সাহাবুদ্দিন জানান, ডাকাতির ঘটনায় ফোন পেয়ে আমরা ওই বাড়ীতে যাই। আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রী ফাতেমা জানান, ঘরের তালা ভেঙ্গে তার ঘরেও ডাকাত দল প্রবেশ করেছে। সে অন্য রুমের দরজা আটকিয়ে বিভিন্ন জনকে ফোন করে বাড়ীতে ডাকাতির খবর জানাচ্ছিল। ডাকাত দল কালো বোরকা পড়া ছিলো।

স্থানীয়রা জানান, বাড়ীতে ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও ৩টি বিল্ডিং রেখে কেন ডাকাত দল টিনের ঘরে ডুকলো ? ডাকাত দল ডাকাতির উদ্দেশ্য ওই ঘরে প্রবেশ করলে, ঘর থেকে কোন স্বর্ণালংকার খোয়া যায়নি। এমনকি নিহত বৃদ্ধ মহিলা হামিদা বেগমের গলায়ও স্বর্ণের চেইন ও কানে স্বর্ণের দুল আছে। হামিদুনেছাকে জবাই করা হয়েছে আর আরাফাতকে গলায় কাটা দাগ রযেছে।

খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে প্রচণ্ড ঝড় বৃষ্টিতে ডাকাতির খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।

(ইউএইচ/এএস/মে ২৮, ২০২৪)