সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের ভৈরবে র‌্যাব হেফাজতে গৃহবধূ মৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাব-১৪, সিপিসি-২ ভৈরব ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার ফাহিম ফয়সালসহ ৪ জন র‌্যাব সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ১৯ মে রবিবার র‌্যাবের প্রধান কার্যালয় থেকে এ আদেশ আসে। ভৈরবে নবযোগদানকৃত ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার এএসপি আব্দুল হাই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যাহারকৃত র‌্যাব সদস্যরা হলো ডেপুটি এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর ইকবাল হোসেন, কর্পোরাল মহিবুল ইসলাম ও কনস্টেবল মনির হোসেন। এদিকে রেখা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নান্দাইল থানার এসআই নাজমুল হাসানকে ময়মনসিংহ পুলিশ লাইনে সংযোজন করা হয়েছে। তবে বিষয়টি প্রত্যাহার না বলে ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এসআই নাজমুল হাসানকে ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নান্দাইল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল মজিদ। ওসি আরো জানান, সুরাইয়া খাতুনকে থানায় ডেকে আনার ঘটনার বিষয়টি আমি এখনো সত্যতা পাইনি।

এ বিষয়ে নাজমুল হাসানের মঠোফোনে একাধিক ফোন দিলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে ভৈরব র‌্যাব ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার ফাহিম ফয়সাল বলেন, আমাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে তাই ভৈরব ছেড়ে চলে যাচ্ছি।

জানা যায়, ১৬ মে বৃহস্পতিবার রাতে সুরাইয়া খাতুনকে নান্দাইল থানা গেইট থেকে আটক করে র‌্যাব-১৪, ভৈরব ক্যাম্পে সদস্যরা। পরদিন শুক্রবার সকালে মৃত অবস্থায় ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকেই ভৈরবে এ বিষয় নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠে। নিহত সুরাইয়া নান্দাইল চণ্ডিপাশা ইউনিয়নের বরুনাকান্দা গ্রামের আজিজুল ইসলামের স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানায়, ঢাকার একটি বিস্কুট কারখানায় চাকরি করতেন সুরাইয়ার ছেলে তাইজুল ইসলাম (২৩) ও রেখা আক্তার (২০)। রেখা আক্তার উপজেলার ভেলামারী গ্রামের হাসিম উদ্দিনের মেয়ে। কর্মস্থলে তাঁদের সম্পর্ক তৈরি হয়। সম্পর্ক থেকেই প্রেম ও বিয়ে। বিয়ের এক বছর না যেতেই চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল স্বামী বাড়িতে মৃত্যু হয় রেখার।

রেখার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ যৌতুক হিসেবে চাওয়া টাকা না পাওয়ায় স্বামী ও শ^শুর শাশুড়ির নির্যাতনে রেখার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় রেখার মা রামিছা খাতুন বাদী হয়ে ১৩ মে সোমবার নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আদালতে মামলা করেন।

এ বিষয়ে সুরাইয়ার খাতুনের স্বামী আজিজুল ইসলাম অভিযোগ করে জানান, আমার পুত্রবধূ ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। আমরা আইনিভাবে বিষয়টি লড়ছি। নান্দাইল থানার এসআই নাজমুল হাসান আমার স্ত্রীকে থানায় ডেকে এনেছিলেন। পরে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে তাকে ছেড়ে দিলে থানা গেইট থেকে র‌্যাব আটক করে ভৈরব র‌্যাব ক্যাম্পে নিয়ে যায়। রাতেই আমি শুনতে পাই আমার স্ত্রী মৃত্যুবরণ করেছে। আমার স্ত্রী সুস্থ ছিলো। আমার স্ত্রীকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

এদিকে নিহত সুরাইয়া খাতুনের পরিবারের দাবী তাদের বাবা র‌্যাবের ভয়ে পালিয়ে আছে। তার জীবন নিয়ে শংকিত। এ বিষয়ে পরিবারকে আজিজুল ইসলাম একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন।

(এসএস/এএস/মে ২০, ২০২৪)