স্টাফ রিপোর্টার : নৌ পথে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি বন্ধসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। দাবি আদায়ে আগামী মঙ্গলবার (৫ মার্চ) থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।

রবিবার (৩ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। দেশের অর্থনীতিতে নৌপরিবহন শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রায় শত ভাগ ব্যক্তিমালিকানায় পরিচালিত এ শিল্প স্বল্প ব্যয়ে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। দেশের আমদানি ও রপ্তানি পণ্য পরিবহনের অনেকাংশেই নৌ-পরিবহনের উপর নির্ভরশীল হওয়া সত্ত্বেও নৌযান শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও নিরাপত্তার বিষয়টি সব সময় উপেক্ষিত।

তিনি আরও বলেন, আমরা সমস্যাগুলোর স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বছরের পর বছর দাবি জানিয়ে আসছি। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে দাবি মেনে নিয়ে কিছু কিছু কার্যকর করলেও অধিকাংশ সিদ্ধান্তই অকার্যকর অবস্থায় উপেক্ষিত রয়েছে বছরের পর বছর ধরে। সেজন্য ১১ দফা দাবি আদায়ে আগামী সোমবার (৪ মার্চ) রাত ১২টা থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা করছি।

তাদের দাবিগুলো হলো :
১. নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নাবিক কল্যাণ তহবিল ও ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে কন্টিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন।

২। সব মালিক সমিতিগুলোকে এক প্লাটফর্মে এনে এককেন্দ্রীক সিরিয়ালে আনা।

৩। মালিক সমিতিগুলোর সঙ্গে গেজেট বর্হিভূত দ্বিপাক্ষিক চুক্তিভুক্ত অমীমাংসিত দাবিগুলো পুনঃনির্ধারণ করে চুক্তি সম্পাদন।

৪। চট্টগ্রাম বন্দরে নিরাপদে জাহাজ রাখার জন্য শঙ্খ নদীকে প্রোতাশ্রয়ের উপযোগী করা, নদীর নাব্যতা রক্ষা, নৌপথ, নদী ও সব সমুদ্র বন্দরে পর্যাপ্ত সংখ্যক মার্কা-বয়া-বাতি স্থাপন, চ্যানেলে জাল পাতা বন্ধ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পাইলট সরবরাহ নিশ্চিত করা।

৫। চট্টগ্রাম চরপাড়া-জালিয়াপাড়া পর্যন্ত নাবিকদের নিরাপদে উঠানামার জন্য কমপক্ষে ৫টি ইজারামুক্ত ঘাট ও মেরিন ড্রাইভ ওয়ের উপর চরপাড়া ও জালিয়াপাড়া এলাকায় ২টি ফুটওভার ব্রিজ স্থাপন।

৬। ভারতগামী নৌযান শ্রমিকদের ল্যান্ডিংপাস নিশ্চিত করা।

৭। পরীক্ষায় অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ ও মালিক কর্তৃক নিশ্চিত হয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া।

৮। বালুবাহী নৌযানে কর্মরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশি হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

৯। আদালতের সিদ্ধান্ত ছাড়া মাস্টার-ড্রাইভার সনদ বাতিলের কর্মকাণ্ড বন্ধ করা।

১০। সামুদ্রিক মৎস শিকারি জাহাজ শ্রমিকদের গেজেটের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন এবং অন্যান্য সব দাবি অবিলম্বে মেনে নিতে হবে।

১১। নৌপথে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি-কালোবাজারি-জাহাজ ছিনতাই বন্ধ করা।

এসময় সংবাদ সন্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. শাহ আলম ও সহ-সভাপতি সৈয়দ শাহাদাত হোসেন।

(ওএস/এএস/মার্চ ০৩, ২০২৪)