চায়না দুয়ারির ফাঁদে অস্তিত্ব সংকটে দেশীয় মাছ
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : সারাদেশের ন্যায় উত্তরের জেলা গাইবান্ধার নদ-নদীসহ বিভিন্ন স্থানে চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহার করে নির্বিচারে দেশীয় প্রজাতির মাছ নিধন করছেন জেলেরা। এতে ভবিষ্যতে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে দেশীয় প্রজাতির এসব মাছ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাছের প্রজনন মৌসুমে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের পর এবার ভয়ংকর চায়না দুয়ারি জালে দেশীয় প্রজাতির সব মাছ ধরা পড়ছে। শুরুর দিকে নদ-নদীতে এ জাল ব্যবহার করা হলেও এখন তা ছড়িয়ে পড়ছে প্রত্যন্ত গ্রামেও। বর্তমানে জেলেরা অহরহ ব্যবহার করতে শুরু করেছেন এ জাল।
বিশেষ করে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও করতোয়া নদীর পানি হ্রাস-বৃদ্ধি ও মাছের প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা পুঁটি, ট্যাংরা, কই, শিং, বাগাইড়, বোয়াল, শোল, টাকিসহ দেশি প্রজাতির সব মাছ চায়না দুয়ারির ফাঁদে নিধন হচ্ছে। এতে ক্রমেই মাছশূন্য হয়ে পড়ছে নদ-নদী ও খাল-বিল।আইন অনুযায়ী দেশে মাছ ধরার যেসব জালের অনুমোদন রয়েছে সেগুলোতে ‘মেস সাইজ’ তথা জালের ফাঁসের একটি গিঁট থেকে আরেক গিঁটের দূরত্ব হতে হয় ন্যূনতম সাড়ে চার সেন্টিমিটার। ওই আকারের চেয়ে ফাঁস ছোট হলে সে জাল আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ। চলতি বছরই চায়না দুয়ারি নিষিদ্ধ জালের তালিকাভুক্ত হয়েছে।
জানা যায়, গাইবান্ধা সদর উপজেলার দাঁড়িয়াপুর হাট, কামারজানি হাট ও হাট লক্ষ্মীপুর, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মীরগঞ্জ, শোভাগঞ্জ, নগর কাঠগড়া ও পাঁচপীর, ফুলছড়ি হাট, সাঘাটা হাটসহ জেলার সাত উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে একদল অসাধু ব্যবসায়ী প্রকাশ্যে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জাল বিক্রি করছেন। হাতের কাছে এবং সহজলভ্য হওয়ায় পেশাদার জেলে ও সাধারণ মানুষরা এ জাল কিনছেন।সরেজমিনে দেখা যায়, সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা দিতে প্রবাহিত তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও করতোয়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে মাছ ধরার জন্য চায়না জাল পেতে রাখা হয়েছে। দুপুরের দিকে নদীতে এ জাল ফেলা হলেও পরদিন সকালে জাল তোলা হয়।জেলেরা জানান, চায়না দুয়ারি জালে ফাঁসের আকার সাড়ে চার সেন্টিমিটারের চেয়েও অনেক কম। এজন্য এই জালে সব ধরনের মাছ ছেঁকে ওঠে। শুধু তাই নয়, মাছের ডিম পর্যন্ত আটকে যায় এই জালে। সহজেই মাছ ধরা যায় এবং দাম কম হওয়ায় অধিকাংশ জেলে এখন চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহার করেন। অনেক শৌখিন মৌসুমি মৎস্য শিকারিও মাছ ধরতে নেমেছেন। ফলে যারা পুরোনো কৌশলে মাছ ধরতেন, তাদের জীবিকানির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে চায়না দুয়ারি কিনছেন। নদীতে চায়না জাল বন্ধে মৎস্য বিভাগের কোনো তৎপরতাও চোখে পড়ে না। প্রকাশ্যেই অনেকে চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহার করেই মাছ ধরছেন।সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের বাসিন্দা ইজ্জাত আলী বলেন, দুপুর গড়িয়ে গেলেই নদীতে চায়না দুয়ারি জাল ফেলা হয়। সারারাত নদীতে রাখার পর সকালে জাল তোলা হয়। এতে দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় সব মাছ ও নদীতে থাকা জলজপ্রাণী ধরা পড়ে। এমনকি ছেঁকে ওঠে মাছের ডিমও। এ জাল দিয়ে মাছ ধরলে কিছুদিন পর হয়তো নদীতে আর কোনো মাছ পাওয়াই কঠিন হবে।
ওমর আলী নামে এক জেলে বলেন, তিস্তায় আগে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরতাম। কারেন্ট জালে খরচ বেশি হওয়ায় এখন চায়না দুয়ারি দিয়ে মাছ ধরি। কারেন্ট জালের চেয়ে চায়না দুয়ারিতে মাছ বেশি পাওয়া যায়।রঞ্জু মিয়া নামে অপর এক জেলে বলেন, আমি অনেক বছর থেকে নদীতে মাছ ধরে জীবিকানির্বাহ করি। এখন নদী পাড়ের অধিকাংশ মানুষ চায়না দুয়ারি দিয়ে মাছ ধরেন। বাড়ির কাছের হাট-বাজারগুলোতে আকারভেদে তিন হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায় পাওয়া যায় এ চায়না দুয়ারি জাল।নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মাছ শিকারি জানান, চায়না দুয়ারি দিয়ে মাছ ধরা ঠিক না, এটা জানার পরেও তারা এই জাল ব্যবহার করেন। সংসার চালানোর জন্যই এই চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে নদীতে মাছ ধরেন।
গাইবান্ধা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফয়সাল আযম বলেন, চায়না দুয়ারি জালের ফাঁস ছোট হওয়ায় মাছসহ নানা ধরনের জলজপ্রাণীও আটকে যায়। ফলে মাছসহ নানা ধরনের জলজ প্রাণী ধ্বংসের মুখে। চায়না দুয়ারি জালের ব্যবহার বন্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, চায়না দুয়ারি জাল দেশে ব্যবহার নিষিদ্ধ। এই জাল বেচাকেনা করলে কিংবা এই জাল দিয়ে মাছ শিকার করলে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। চায়না দুয়ারি জালের ব্যবহার ঠেকাতে প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
(এসআইআর/এএস/আগস্ট ০২, ২০২৩)
পাঠকের মতামত:
- সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের নামে প্রথম মামলা
- প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৪ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা
- 'শোষকের গুলিতে প্রাণ দিতে প্রস্তুত কিন্তু জনগণের অধিকারের প্রশ্নে আপোষ হবে না'
- যাত্রাভঙ্গ
- সবার আমি ছাত্র
- দাবানলের কারণে আবার পেছালো অস্কার মনোনয়ন
- পেট খালি রাখলেই বিপদ
- ‘বিএনপির সংস্কার কর্মসূচি জাতির মুক্তির সনদ’
- ঘোষণাপত্র জারি হবে ছাত্রদের নেতৃত্বে, উপস্থিত থাকবেন সবাই
- সিটি মিনিস্টার পদ থেকে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ
- সাতক্ষীরায় প্রায় ২৭ লক্ষ টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ করেছে বিজিবি
- শ্যামনগরে পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে ঐতিহ্যবাহী মোরগ লড়াই
- কুশিয়ারা তীরে তিনদিনের মেলায় ২০ কোটি টাকার মাছ বিক্রি
- কোটচাঁদপুরে কাঠ রিফাইন করা বয়লার বিস্ফোরণে নিহত ২
- সব বিনিয়োগ সংস্থাকে এক ছাতার নিচে আনার আহ্বান
- জামালপুরে জাতীয় কবিতা পরিষদের কমিটি গঠন
- মাগুরায় ইসাডোর শীতবস্ত্র বিতরণ
- রক্ষাকবজ হিসেবে জামায়াত নেতাদের তদবির
- বাগেরহাটে বিশ্বমানের ক্যান্সার হাসপাতাল পরিদর্শন করলেন ২৫ বিসিএস কর্মকর্তা
- নাটোরে আদিবাসী কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ, যুবক আটক
- ভোটার হালনাগাদ নিয়ে ইসির বিশেষ ১৬ নির্দেশনা
- নাটোরের বড়াইগ্রামে ভুতুড়ে কৃষি মেলা, লক্ষ টাকা গচ্চা!
- ওয়ালটন প্লাজার ‘চ্যালেঞ্জার্স সামিট’ অনুষ্ঠিত
- ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাপেয়ারেল ডিজাইনের ভবিষ্যৎ শীর্ষক সেমিনার
- মগড়ায় বিএনপি নেতা টুকুর পক্ষে শীতবস্ত্র বিতরণ
- একমাস পর সর্বনিম্ন সংক্রমণ শনাক্ত ভারতে
- বিএনপি-জামায়াত রাজনীতির বিষ
- সুবর্ণচরে চর জিয়া উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে আলোচনা সভা
- মঞ্চে গিটার বাজাতে বাজাতেই মারা গেলেন পিকলু
- বিজয় দিবসে শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের মিলন মেলা
- জেলে রাত কাটিয়ে ঘরে ফিরলেন ‘পুষ্পা’
- ‘ভাসানী ছিলেন আপসহীন যোদ্ধা’
- কাপ্তাইয়ে উন্মুক্ত নক আউট ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন
- মাদারীপুরে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ
- খাগড়াছড়িতে বাঙ্গালি ছাত্র পরিষদের সড়ক অবরোধ
- মাকে বাঁচাতে জবি শিক্ষার্থীর আকুতি
- পদত্যাগ করে দেশ ছাড়লেন শেখ হাসিনা
- নিউ ইয়র্কে সাকিব আল হাসানের নয়া কৌশলে চাঁদাবাজি
- টিউলিপের বিকল্প খুঁজছে লেবার পার্টি
- পাঠ্যবইয়ে র্যাপার হান্নান ও সেজান
- ডেঙ্গুতে আরও ৪ মৃত্যু, একদিনে হাসপাতালে ২৪১ জন
- ‘স্টাইলিশ স্টার’ অল্লু অর্জুন গ্রেপ্তার
- তোমার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম যে ব্যক্তিটি খুনি মোশতাককে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, তিনি মাওলানা হামিদ খান ভাসানী, যাকে তুমি পিতৃজ্ঞানে শ্রদ্ধা করতে
- সড়কে মৃত্যু: প্রতিদিনের ট্র্যাজেডি এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব
- 'আমি নিশ্চিত, পিতা মুজিব যদি রাষ্ট্রপতির প্রটোকল মেনে বঙ্গভবনে থাকতেন, তাহলে বাঙালির এতো বড় মহাসর্বনাশ কেউ করতে পারত না'