E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

রংপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ 

২০২৪ মে ১৩ ১৭:৩৮:৩৩
রংপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ 

স্টাফ রিপোর্টার : টাঙ্গাইলের যুগ্ম দায়রা জজ আদালতের সাবেক বিচারক ও বর্তমানে রংপুরে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সুরুজ সরকারের শাস্তি দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। 

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর ঢাকা খিলক্ষেতের বাসিন্দা মোঃ মাহফুজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি সোমবার (১৩ মে) লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের সাথে তিনি ২৪টি কাগজপত্র দাখিল করেছেন।

লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, তিনি টাঙ্গাইলের যুগ্ম দায়রা জজ, ১ নং আদালতের দায়রা মামলা নং- ২৪৯/২০২১ এর বিবাদী/আসামী/আপিলকারী। জনৈক খঃ হাসমত আলী বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে বিগত ০৩ মার্চ ২০২০ তারিখে টাঙ্গাইলের বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৮৮১ সালের এনআই এ্যাক্টের এর ১৩৮ ধারায় ২০ লক্ষ টাকার একটি সি.আর.মামলা দায়ের করেন। তিনি বিগত ১০ নভেম্বর ২০২০ তারিখে বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রাপ্ত হন।

মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হলে বিজ্ঞ দায়রা জজ আদালতে প্রেরণ করা হয়। উক্ত মামলাটি বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য বিজ্ঞ যুগ্ম দায়রা জজ, ১ম আদালত টাঙ্গাইলে প্রেরণ করা হয়। বিগত ২৬ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে অভিযোগকারী বিজ্ঞ আদালতে হাজির হয়ে পূর্ব শর্তে জামিন লাভ করেন এবং ফৌজদারী কার্যবিধির ২৬৫(গ) ধারা অনুযায়ী মামলার দায় হতে অব্যাহিতর আবেদন জানান। বিজ্ঞ আদালত তার আবেদন না মঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে ১৮৮১ সালের ১৮৮১ সালের এনআই এ্যাক্টের এর ১৩৮ ধারায় চার্জ গঠন করেন এবং সাক্ষীর জন্য ০৭.০৪.২০২১ তারিখ ধার্য করেন।
কিন্তু মহামারী করোনার কারণে বিগত ০৪ এপ্রিল ২০২১ তারিখে সরকারের মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ বিগত ০৫ এপ্রিল ২০২১ ভোর ছয়টা থেকে ১১ এপ্রিল ২০২১ রাত ১২টা পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। একই তারিখে একই ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। যার ফলে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকে।

মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট হইতে বিগত ১৯ জুন ২০২১ তারিখে এক আদেশে ২০ জুন ২০২১ তারিখ হতে অধস্তন দেওয়ানী ও ফৌজদারী আদালত এবং ট্রাইব্যুনালসমূহে শারীরিক উপস্থিতিতে স্বাভাবিক বিচার কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ প্রদান করেন । কিন্তু মহামারি করোনায় আক্রান্ত হয়ে টাঙ্গাইল জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ কয়েকজন আইনজীবী মৃত্যুবরণ করায় বিগত ২০ জুন ২০২১ তারিখে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয় এবং আদালতের কার্যক্রম স্থগিত থাকে। বিগত ২০ জুন ২০২১ তারিখে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ২২ জুন ২০২১ তারিখ ভোর ছয় টা হতে ২৮ জুন ২০২১ তারিখ রাত ১২ টা পর্যন্ত টাঙ্গাইল পৌরসভা ও এলেঙ্গা পৌরসভা পর্যন্ত কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেন । তৎপ্রেক্ষিতে গত ২২ জুন ২০২১ থেকে ২৮ জুন ২০২১ তারিখ পর্যন্ত আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকে।

বিগত ১২ আগস্ট ২০২১ তারিখে তার নিযুক্তীয় বিজ্ঞ আইনজীবী মামলার তারিখ সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখতে পান আদালতের কজলিস্টে উক্ত মামলা বিগত ২১ জুন ২০২০ (প্রকৃতপক্ষে হবে ২১ জুন ২০২১) ইং তারিখ নির্ধারণ আছে ও উক্ত তারিখে বিজ্ঞ আদালত আসামির জামিন বাতিলপূর্বক পলাতক দেখিয়ে তার ও তার র নিয়োজিত বিজ্ঞ আইনজীবীর অনুপস্থিতিতে শুধু বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এছাড়া আসামি পক্ষকে জেরা করার সুযোগ না দিয়ে এবং ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় পরীক্ষা না করেই এবং যুক্বিতর্কের জন্য তারিখ ধার্য না করেই বিগত ৩০ জুন ২০২১ তারিখে উক্ত মামলায় একতরফাভাবে রায় ও আদেশ প্রদান করেন। রায়ে আসামিকে এক বছরের সাজা ২১ লক্ষ টকা অর্থদণ্ড প্রদান করে রায় ও আদেশ প্রচার করেন।

তিনি আরো বলেন, বিগত ১৭ আগস্ট ২০২১ ইং তারিখে তিনি টাঙ্গাইল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর টাঙ্গাইলের যুগ্ম দায়রা জজ, ১ নং আদালতের বিচারক মোঃ সুরুজ সরকার কর্তৃক দায়রা মামলার বিভ্রান্তিমূলক তারিখ নির্ধারণ ও অবৈধ রায় ও আদেশ প্রদানের বিপরীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু আইনজীবী সমিতি আজ পর্যন্ত কোন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নাই। তার বিরুদ্ধে সাজা ও গ্রেপ্তারী পরোয়ানার প্রেক্ষিতে বিগত ১৪ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে খিলক্ষেত থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। বিগত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে তিনি আপিলের শর্তে জামিন লাভ করেন। তিনি জামিনে বেরিয়ে টাঙ্গাইলের বিজ্ঞ দায়রা জজ আদালত আপিল দায়ের করেন।

তিনি অভিযোগে বলেন, টাঙ্গাইলের যুগ্ম দায়রা জজ, ১ নং আদালতের বিচারক মোঃ সুরুজ সরকার কর্তৃক দায়রা মামলার বিভ্রান্তিমূলক তারিখ নির্ধারণ ও অবৈধ রায় ও আদেশের প্রেক্ষিতে তার ৮ মাস পাঁচ দিন কারাগারে থাকতে হয়েছে। এতে তার লক্ষ লক্ষ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া কখনোই সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি টাঙ্গাইলের যুগ্ম দায়রা জজ, ১ নং আদালতের বিচারক মোঃ সুরুজ সরকার বর্তমানে রংপুরে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি তার উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।

(এসটি/এসপি/মে ১৩, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test