E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

আবার ফিরে আসছে সেই অন্ধকারময় দিনগুলি

২০২৪ জুন ০২ ১৬:৩৩:৩৭
আবার ফিরে আসছে সেই অন্ধকারময় দিনগুলি

গোপাল নাথ বাবুল


ভাইরাস এক বিশেষ পরিচিত শব্দ। বিশেষ করে বিগত কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের পর থেকে বিভিন্ন রোগের পরজীবী হিসেবে এটি মানুষ বা অন্য জীবদেহে সংক্রমিত হয় এবং রোগের সৃষ্টি করে। যদিও এ ভাইরাসগুলি তাদের পোষকের সঙ্গে সুরক্ষিত এবং তাদের মিউটেশনগুলি এমন স্ট্রেন বা জাত তৈরি করতে পারে যা কোনো প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ২০২০ সালে সারাবিশ্বের সঙ্গে করোনা নামক এ অদৃশ্য ভাইরাসের সঙ্গে বাংলাদেশ নামক এ ছোট্ট দেশটিরও পরিচয় ঘটে। মূলত এর উৎপত্তি হয়েছিল চীন থেকে। চীন দেশের এক প্রান্তিক শহরেই ২০১৯ সালের শেষের দিকে প্রথম ‘করোনা’ নামক ভাইরাসের দেখা মিলেছিল বলেই এর নাম রাখা হযেছিল ‘কোভিড-১৯’। পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে এ অদৃশ্য দানব সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বে যে পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, অন্যান্য মারণ রোগে এর চেয়েও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। তারপরও করোনার আলোচনা-সমালোচনা বেশি হওয়ার কারণ, এ সময়ে তার সর্বগ্রাসী বিধ্বংসী আক্রমণে অনিশ্চিত জীবনের হাতছানি জনমানসে বেপরোয়াভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। সারাবিশ্ব স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল, মানুষ ঘরে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিল এবং মানবজীবন অসহায় হয়ে পড়েছিল। করোনার অদৃশ্য আক্রমণে আমাদের সামাজিক জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। সেক্ষেত্রে গৃহবন্দি নিঃসঙ্গ জীবনে বেঁচে থাকার লক্ষ্যে আমাদের জীবন প্রত্যয়ে অনিশ্চয়তা স্বাভাবিক হয়ে এসেছিল। এক কথায় ঘরের মধ্যেই শ্মশান জেগে ওঠেছিল। পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রতিটি মুহূর্তেই অবিশ্বাসী অস্থিরতার পরশ আমাদের সচকিত করে তুলেছিল। কিছুতেই বিশ্বাকে থিতু হতে না পারা মানুষের মধ্য থেকে অশান্তির ছায়াই শূন্যতায় মিলিয়ে গিয়েছিল। বেঁচে থাকার বিশ্বাসটাই তখন লটারি পাওয়ার মতো ভাগ্যনির্ভর মনে হয়েছিল। এ অদৃশ্য ভাইরাসটির কারণে বিশ্বব্যাপী এক অজানা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। কারণ এটা ছিল এক নয়া রূপের ভাইরাস। ফলে এ ভাইরাসটি সম্পর্কে চিকিৎসকরাও অজ্ঞ ছিল। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের কাছে এটা ছিল সম্পূর্ণ নতুন বিষয়। তাই প্রাথমিকভাবে এ ভাইরাসের মোকাবিলায় ছিল জনসচেতনতা এবং কিছু পালনীয় কর্তব্য। বিভিন্ন রাষ্ট্র কর্তৃক বিভিন্ন উপদেশ জারি করা হয় এবং নেওয়া হয় মানুষের বিভিন্ন কার্যাবলীর নিয়ন্ত্রণ।

করোনাকালেই বিশ্ববাসী ‘সোশ্যাল ডিস্টান্সিং’, ‘হোম কোয়ারেন্টাইন’, ‘জনতা কাফু’, ‘লকডাউন’ ইত্যাদি কিছু নতুন শব্দের সঙ্গে পরিচিত হয় এবং নানা অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়। করোনা মহামারিকালে চিকিৎসক এবং চিকিৎসা কর্মীদের প্রথম সারির যোদ্ধা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হযেছে বয়স্ক রোগীদের এবং যে সমস্ত ব্যক্তির পূর্বের কোনও জটিল রোগ রয়েছে এমন রোগীদের বেশি করে করোনার উপসর্গ ধরা পড়ার পর হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। এ রোগটি ছিল মূলত শ্বাসনালী প্রদাহ। এজন্য এ রোগে আক্রান্তদের বেশিরভাগই শ্বাসকষ্টের রোগী ছিল। ফলে প্রয়োজন হতো অক্সিজেনের। ২০২০ থেকে করোনার দাপট চলে ২০২২ সাল পর্যন্ত। এর মধ্যে ভ্যাকসিন আবিষ্কার হওয়ায় এ ভাইরাস ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

মানবদেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত হয় বলে এর বিরুদ্ধে সচেতনতাকেই বড় হাতিয়ার বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা, সামাজিক দুরত্ব মেনে চলা, বারবার হাত ধোয়া ইত্যাদির ওপর জোর দেওয়া হয়। এভাবেই মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই জারি ছিল। এ আত্মবিশ্বাসই আসলে বেঁচে থাকার মূলধন ছিল। করোনার আঘাত সেখানেই লক্ষ্যভেদী হয়ে ওঠে। সেই ভয় এখনো অনেকেই কাটিয়ে ওঠতে পারেননি। আবারও সেই ২০২০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত বছর তিনেকের পুরানো ভয়ের আতঙ্ক গণমাধ্যমে ওঠে এসেছে। বিভিন্ন দেশে করোনা আক্রান্তের কথা বা মৃত্যুর কথাও মাঝে মাঝে শোনা যাচ্ছে।

সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে করোনার এক নতুন ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান মেলায় ফের উদ্বিগ্ন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। ভারতের মহারাষ্ট্র, কেরল, কর্নাটক, গোয়া, ঝাড়খন্ডের পর এবার পশ্চিমবঙ্গে খোঁজ মিলল করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের এবং ৫ জনের আক্রান্ত হওয়ার হদীশ মিলেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত সারা দেশে ২৭২ জন নতুন উপপ্রজাতির করোনা ভাইরাস অর্থাৎ কেপি-২ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে মাথাচাড়া দিচ্ছে সেই অদৃশ্য দানব বা মারণ ভাইরাস। সঙ্গে ফিরছে সেই অন্ধকারময় দিনগুলো। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার প্রত্যেক রাজ্যকে বলে দিয়েছে যেন, এ মারণ ভাইরাস নিয়ে সতর্ক থাকে। সকল রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও স্বাস্থ্যসচিব।

সিঙ্গাপুরেও সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের দেখা মিলেছে। নতুন করে ঢেউ ছড়ানো কোভিড-১৯ এর ধাক্কায় সিঙ্গাপুরে গত ৫ থেকে ১১ মে’র মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৯০০ জন। ১১ মে ওই দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওং ইয়ে কুং সকলকে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে সংক্রমণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছতে পারে। অর্থাৎ জুনের মাঝামাঝি থেকে শেষদিকে করোনা সংক্রমণ শীর্ষে পৌঁছবে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রক টুইট করে জানিয়েছে, এর আগের সপ্তাহে সংক্রমিত হয়েছিলেন ১৩ হাজার ৭০০ জন। সেটাই বেড়ে ২৫ হাজার ৯০০ জন হয়েছে। আগের সপ্তাহে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮১ জন, সেখানে তা বেড়ে হয়েছে ২৫০ জন এবং আইসিইউতে ভর্তি হয়েছে ৩ জন। এ পরিস্থিতিতে ৪টি বিষয় খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে সকলকে। বার বার হাত ধোয়ার মতো সতর্কতা অবলম্বন করা, ভিড় এলাকায় মাস্ক পরা, অসুস্থ থাকলে সামাজিক মেলামেশা বন্ধ রাখা, কোভিড টিকা নেওয়া।

বৃটিশ বিশেষজ্ঞের পূর্বাভাস, সামনে যে মহামারি আসছে, তা করোনার চেয়েও ভয়াবহ হবে এবং লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে দ্যা ডেইলি মেইলের এক খবরে জানা যায়। এজন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন ২ বৃটিশ বিশেষজ্ঞ কেট বিংহাম এবং টিম হেমস। তারা বলেন, ‘আমরা এখনো নিশ্চিতভাবে জানি না, এ মহামারি কী রূপ নেবে এবং কতটা ভয়ঙ্কর হবে। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যসহ গোটা বিশ্ব এখনো প্রস্তুত নয়’।

তারা আরো বলেন, এক সময় করোনাকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সারাবিশ্বের সরকারগুলো বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সংকটের জন্য বিপজ্জনকভাবে অপ্রস্তুত ছিল। আসলে অনেকেই এটিকে অ্যাপোক্যালিপ্টিক কল্পকাহিনীর উপাদান হিসেবে দেখেছেন। কিন্তু করোনার জন্য গণটিকাদানই ছিল একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য সমাধান। আজও পৃথিবীতে অনেক ভাইরাস রয়েছে। বিজ্ঞানীরা ২৫টি ভাইরাস পরিবার সম্পর্কে অবগত।

বৃটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রক সে দেশের জনগণের উদ্দেশ্যে এজন্য ৩ দফা নির্দেশ জারি করেছে। আপদকালীন সময়ে কী করতে হবে, কী করা যাবে কিংবা যাবে না, এসব নিয়ে হোয়াট্‌অ্যাপে, ইমেলে-সহ বিভিন্ন প্রিন্টিং ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সরকারি বার্তা দেওয়া হয়েছে। এসব দফার মধ্যে একটি হলো, সব পরিবারের মাথাপিছু একটি করে ইমার্জেন্সী কীট বক্স রাখতে হবে। তাতে থাকবে পাওয়ার ব্যাগ, মিনি রেডিও, ছোট টর্চ, জলের বোতল, শুকনো খাবার, কমপক্ষে ৬টা মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সর্দি-কাশীর ওষুধ। বৃটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রকের স্বাস্থ্যবার্তায় বলা হয়েছে, সর্দি-কাশী বা সামান্য জ্বর হলে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হবে। বর্তমান বৃটিশ উপপ্রধানমন্ত্রী জনগণের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আবার মহামারীর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তেমনটাই ঘটলে আগে থেকেই ঘরে তার প্রাথমিক মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থাও বিশ্ববাসীকে সতর্ক করেছে প্রাণঘাতী ও বাড়-বাড়ন্ত জীবানু নিয়ে।

বৃটেনের প্রাক্তন মূখ্য বিজ্ঞান উপদেষ্টা ও শীর্ষ বৃটিশ বিজ্ঞানী স্যার প্যাট্রিক ভ্যালেন্স ‘হে ফেস্টিভাল’ নামের এক অনুষ্ঠানে দাবি করেছেন, আরো একটি মহামারী অবশ্যম্ভাবী এবং অনিবার্য। তিনি জোর দেন, বিপদকে আগে থেকেই চিনে নিতে নজরদারি বাড়ানোর ওপর। সে সঙ্গে তাঁর দাবি, জি-৭ নেতাদের ২০২১ সালে তিনি যে বার্তা দিয়েছিলেন তা যেন ২০২৩ সালে এসেই তারা বিস্তৃত হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে সবাইকে সতর্ক করে স্যার প্যাট্রিকের আর্জি, ‘এগুলো আপনারা ভুলে যেতে পারেন না’।

তাঁর মতে, সেনারা যেমন দেশরক্ষায় সদাসতর্ক থাকেন তেমনিই মহামারী মোকাবিলার প্রস্তুতিও সবসময় থাকা দরকার। তাঁর কথায়, ‘আমরা জানি আমাদের একটা সেনাবাহিনী রয়েছে। তার মানে তো এই নয় যে, এ বছরই একটা যুদ্ধ হবে। কিন্তু আমরা জানি, দেশ গড়তে এটা প্রয়োজন। এ বিষয়েও (মহামারী) আমাদের একইভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে এবং মহামারীর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, তখন আর এসবের প্রয়োজন নেই, তা ভাবলে চলবে না। কেননা, অনেক সময়ই মহামারীর কোনো লক্ষণ থাকে না’। বর্ষীয়ান এ বৃটিশ বিজ্ঞানী আশা করেন, সব দেশের মধ্যে মহামারী মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়েও চুক্তি হোক। এ ধরনের চুক্তি হলে তা হবে সদর্থক পদক্ষেপ।

স্যার প্যাট্রিক ভ্যালেন্স বিশ্ববাসীকে সতর্ক করার কয়েকদিন আগে বেজিংয়ের ন্যাশনাল মেডিক্যাল সেন্টার ফর ইনফেকশিয়াস ডিজিজের প্রধান ডাঃ ঝ্যাং ওয়েনহংও জানিয়েছেন, ফের করোনা ভাইরাস মাথাচাড়া দিচ্ছে। সুতরাং সামনে আর এক মহামারী অবধারিত। জুন মাসে সংক্রমণের হার সর্বোচ্চ হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ডাঃ ঝ্যাং জানিয়েছেন, তাঁরা ‘যদি’ নয়, ‘কবে’ নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন। অর্থাৎ তাঁর মন্তব্য থেকে পরিষ্কার, ফের নতুন কোনো মহামারী প্রায় অবধারিত। কোভিড-১৯ ভাইরাসের বিরুদ্ধে চীনের লড়াইয়ে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন ঝ্যাং। এ মুহূর্তে তিনি ব্যস্ত জলবায়ু পরিবর্তন ও সংক্রামক রোগের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণায়। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, সাম্প্রতিক করোনা মহামারীর পর এবার গোটা বিশ্বই প্রস্তুতি নিচ্ছে পরবর্তী মহামারীর। তিনি জানিয়েছেন, সব ধরনের সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভেক্টরবাহিত অসুখ যথা এনসেফেলাইটিস ও লাইমে যেভাবে সম্প্রতি আমেরিকায় ছড়িয়েছে কিংবা চীনে ছড়িয়েছে ম্যালেরিয়া, তা থেকে ‘সিঁদুরে মেঘ’ খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা। প্রসঙ্গত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তথা ‘হু’ আগেই ম্যালেরিয়ার মতো অসুখ নিয়ে সতর্ক করেছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ইস্যুর কোভিডের মতো মহামারী সৃষ্টির ক্ষমতা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এর আগেও ‘জার্নাল অফ জিওফিজিক্যাল রিসার্চ অ্যাটমস্ফিয়ার ইন ২০২০’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা পত্রে ঝ্যাং এর গবেষক দল জানিয়েছিল, কীভাবে সমুদ্রতলের উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে কীভাবে তা ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের ‘আধার’ হয়ে ওঠছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোভিড-১৯ এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট জেএন.১ এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে যেমন হাসপাতাল/চিকিৎসা কেন্দ্র এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদেরকে সতর্ক হিসেবে মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সংস্থাটি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের চতুর্থ ডোজ ভ্যাকসিন নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে। সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় (১ জুন) নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৫৫ জন, মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৫৭০২০১৩ জন। নতুনভাবে শনাক্ত হয়েছে ২২ জন, মোট শনাক্ত হয়েছে ২০৫০৪৭৭ জন। সুস্থ হয়েছে ১১ জন, সর্বমোট সুস্থ হয়েছে ২০১৭৮৮০ জন।

সুতরাং মানুষ বাঁচে বিশ্বাসে। সেই বিশ্বাসেই থাবা বসিয়েছিল অদৃশ্য দানব করোনা ভাইরাস। তার রেশ মিলতে না মিলতেই আবারও তা ফিরে আসার আগাম বার্তাই মানুষের মনে বিভীষিকাময় আতঙ্ক জেগে ওঠার উপক্রম হয়েছে। এতে ভীত না হয়ে দেশের জনগণকে এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে। কারণ, বিশ্বাসই মানুষের স্বকীয় অস্তিত্বেই অপ্রতিরোধ্যভাবে অগ্রসর হয়েছে চিরকাল এবং হাজার বিপজ্জনক হলেও মানুষ চিরকাল তা জয় করে এসেছে। মানুষকেই সেই আত্মবিশ্বাসকে জীবন দিয়েও রক্ষা করে যেতে হবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের পরামর্শ মতে, করোনা ভাইরাসকে মোকাবিলা করার সেই মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান দিয়ে হাত ধোয়া প্রভৃতি নিয়মগুলি পালন করতে হবে। তাহলে আমরা আবারও ‘কোভিড-১৯’কে যেভাবে জয় করেছি, সেভাবেই যেকোনো অদৃশ্য দানবকে জয় করতে পারবো এবং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো বলতে পারবো, ‘আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহ দহন লাগে/ তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে’।

লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট।

পাঠকের মতামত:

২৮ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test