বঙ্গবন্ধুর “জুলিও কুরি” শান্তি পদক প্রাপ্তীর ৫০ বছর এবং প্রাসঙ্গিক ভাবনা
রহিম আব্দুর রহিম
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ২৩ মে “জুলিও কুরি” শান্তি পদক লাভ করেন। এবছর ২৩ মে এই পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। স্বাধীন দেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রাপ্ত “জুলিও কুরি” শান্তি পদক সারা বিশ্বে বাঙালির আত্মপরিচয়ের বিশ্ব দলিল। রাজনীতির কবি, রাষ্ট্র নায়কের প্রাপ্ত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বাঙালি, বাংলা, স্বাধীন সার্বভৌমত্বের রত্মখচিত মাইল ফলক। যার ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ, ভাবার্দশে 'বঙ্গবন্ধু' 'বিশ্ববন্ধু'তে অভিষিক্ত হন। যা একটি স্বাধীন দেশের রাষ্ট্র নায়কের প্রথম আন্তর্জাতিক পদক প্রাপ্তি। মুক্তিযোদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শন, নীতি নৈতিকতা, মুক্তির প্রশ্নে আপসহীন, আপামর জনতার চাহিদা পূরণে অগ্রণী ভূমিকায় "মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়কত্বের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিশ্বশান্তি পরিষদের প্রেসিডেন্সিয়াল কমিটির সভায় পৃথিবীর ১৪০টি দেশের প্রায় ২০০ সদস্যের স্বতস্ফূর্ত উপস্থিতি ও ঐকমতের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুকে জুলিও কুরি পদক প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর 'পদক প্রাপক' হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নাম ঘোষণা করে।
এরপরের বছর ২৩মে এশীয় শান্তি সম্মেলনের আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে বিশ্বশান্তি পরিষদের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল রমেশচন্দ্র বঙ্গবন্ধুকে জুলি কুরি পদক পরিয়ে দেন। ওই সময় রমেশচন্দ্র তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, "বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলার নন, তিনি বিশ্বের এবং তিনি বিশ্ববন্ধু।" এই বিশ্ববন্ধুর পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্ণ হবার দিনটি সারাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হয়েছে। দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্টপতি শাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে রাষ্ট্টপতি বলেন, "বঙ্গবন্ধু সমগ্র জীবন ছিল শান্তির সাধনায় উৎসর্গকৃত।১৯৭৩ সালের ২৩মে ঢাকায় শান্তি সম্মেলনে পদক গ্রহণোত্তর ভাষণে তিনি যর্থাথই ঘোষণা করতে পেরেছিলেন যে,তাঁর জীবনের মূলনীতিই হলো শান্তি। বঙ্গবন্ধু যে মুক্ত সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন, তার মধ্যে কেবল রাজনৈতিক স্বাধীনতা নয়,ছিলো বাংলার শোষিত,বঞ্চিত ও নির্যাতিত মানুষের জন্য শান্তির স্বপ্নও। সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি সব সময়ই বিশ্বের শান্তিকামী মানুষদের সর্মথন করেছেন, তাঁদের পাশে দাড়িয়েছেন।"
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, "জীবনব্যাপী আন্দোলন সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছিলেন শান্তির অন্বেষণে নিবেদিত। ছাত্র জীবনে তিনি কলিকাতার ভয়াল দাঙ্গার মধ্যে অসহায় বিপদাপন্ন মানুষকে উদ্ধারের জন্য জীবন বাজী রেখে নির্ভয়ে ছুটে গেছেন।নবীন রাজনীতিবিদ হিসেবে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত প্রথম এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলীয় শান্তি সম্মেলনে প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিয়েছেন। ১৯৫৬ সালে বিশ্বশান্তি পরিষদের স্টকহোম সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন। বাংলার মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য একদশকেরও বেশী সময় জেল খেঁটেছেন এবং পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডনে প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনেই 'সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বৈরিতা নয়, শান্তির এই বাণী ঘোষণা করেছেন। তিনি সব সময় এশিয়া -আফ্রিকা-ল্যাটিন আমেরিকাসহ সব মুক্তিকামী মানুষদের সমর্থন জুগিয়েছেন এবং অবিচল কন্ঠে শোষিতের পক্ষে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেছেন।
উল্লেখ্য, বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৫০ সাল হতে ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামে, মানবতার কল্যাণে, শান্তির স্বপক্ষে বিশেষ অবদানের জন্য খ্যাতিমান ব্যক্তি ও সংগঠনকে ‘জুলিও-কুরি’ শান্তি প্রদান করা হয়। জঁ ফ্রেদেরিক জুলিও-কুরি এবং স্ত্রী ইরেন জুলিও-কুরি বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী দম্পতির নামানুসারে এ পদকের নামকরণ। ‘ফিদেল ক্যাস্ট্রো, ইয়াসির আরাফাত, হো চি মিন, নেলসন ম্যান্ডেলা, সালভেদর আলেন্দে, ইন্দিরা গান্ধী, মাদার তেরেসা, জওহরলাল নেহেরু, লিওনিদ ব্রেজনেভ, মার্টিন লুথার কিং, কবি ও রাজনীতিবিদ পাবলো নেরুদা প্রমুখ বিশ্ব নেতারা এই সম্মানজনক পদক লাভ করে গৌরবান্বিত হয়েছেন।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ছিল সংগ্রামের, যিনি ছাত্র অবস্থায়ই ছিলেন রাজনীতি-সচেতন।ছিলেনপাকিস্তান আন্দোলনের একজন অতি উৎসাহী কর্মী। কিন্তু পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর শাসকগোষ্ঠীর গণবিরোধী ভূমিকার কারণে বঙ্গবন্ধু তাঁর অবস্থান পরিবর্তন করতে দেরি করেন নি। যিনি ছিলেন ন্যায়ের পক্ষে, জুলুমের বিরুদ্ধে অনন্তস্বাধীন। যাঁর জীবন নিবেদিত ছিল দুঃখি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর নানামূখি তৎপরতা। এই মহান নেতা জীবনের সুখ বিসর্জন দিয়েছেন। বাংলার মানুষের দুঃখ দুর্দশা মোচনের লড়াই সংগ্রামে অসাধারণ ভূমিকার জন্য তিনি ১৯৬৯ সালেই হয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধু।
বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ে একনিষ্ঠভাবে কাজ করায় ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা। তার দল আওয়ামী লীগ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। জন রায়ে তাঁরই হওয়ার কথা পাকিস্তানের নির্বাচিত প্রথম প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর নেতা ইয়াহিয়া খান বাঙালির হাতে শাসন ক্ষমতা অর্পন না করে এক বর্বর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়।
গণতন্ত্রের লড়াইয়ে আপোষহীন মহান নেতা শেখ মুজিবকে বাধ্য হয়েই ডাক দিতে হয় জনযুদ্ধের, স্বাধীনতা যুদ্ধের। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ায় প্রতিবেশি দেশ ভারত। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী অকৃত্রিম বন্ধুর মতো বাংলাদেশের মুক্তি পাগল মানুষের পক্ষে দাঁড়ান। বাংলাদেশ পায় সোভিয়েত ইউনিয়নসহ সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের সমর্থন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কারাগারে বন্দি থেকেও হয়ে ওঠেন মুক্তিযুদ্ধের প্রধান নেতা তাঁর নামেই চলে ৯ মাসের অসম সাহসী যুদ্ধ এবং তাঁর প্রেরণাতেই ঘটে যুদ্ধজয়। বন্দি মুজিব বিশ্ববসীর দৃষ্টি কাড়েন। তাঁর অসীম সাহস মনোবল এবং মানুষের প্রতি তাঁর দরদের কথা ছড়িয়ে পড়েছিল বিশ্বময়। তিনি হয়ে উঠেন মহকালের ধ্রুব মহাকন্ঠস্বর।
বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রত্যয়ী বঙ্গবন্ধুর শান্তির দর্শনের অন্যতম উপাদান ছিল-যুদ্ধ পরিহার করে যে কোন বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান, সকল প্রকার বঞ্চনা ও শোষণমুক্তির মাধ্যমে ন্যায়ভিত্তিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমাজ প্রতিষ্ঠা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণ। বঙ্গবন্ধু সবসময় যুদ্ধের বিপক্ষে ছিলেন। তাই তিনি বলেছেন, ‘আমরা চাই, অস্ত্র প্রতিযোগিতায় জন্য অর্থ ব্যয় না করে, ওই অর্থ দুনিয়ার দুঃখি মানুষের কল্যাণের জন্য খরচ করা হোক। তবেই পৃথিবী থেকে দারিদ্র্যের অভিশাপ মুছে ফেলা অনেকটা সহজসাধ্য হবে।
অসাম্প্রদায়িক চেতনার উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল বঙ্গবন্ধুর শান্তি দর্শন। বঙ্গবন্ধুর কর্মকান্ড এবং রাজনৈতিক চিন্তাধারায় ছিল শুধু মানুষের কল্যাণ; মানবমুক্তি, অসাস্প্রদায়িক বিশ্ব, ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ও শান্তির বার্তা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বিশ্বের মুক্তিকামী নিপীড়িত মেহনতী মানুষের শান্তি সাম্য স্বাধীনতা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখে বিশ্বের নেতার সম্মান লাভ করেন। তার পূর্বে পুরস্কারপ্রাপ্ত মহান ব্যক্তিদের মতই তিনিও ছিলেন অবিসংবাদিত নেতা।
গণতন্ত্র স্বাধীনতা ও শান্তিতে অবদান রাখায় রাষ্ট্র পরিচলনা মাত্র ১ বছর ৪ মাস ১২ দিনের মাথায় ২৩ মে ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুকে “জুলিও কুরি” শান্তি পুরস্কার প্রদান করে। ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে শত্রুতা নয়’ পররাষ্ট্রনীতিতে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক যুগান্তকারী এ নীতি গ্রহণ এবং বিশ্ব শান্তির ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের বিষয়টি বিশ্ববাসীর চেতনায় প্রবলভাবে নাড়া দেয়। একজন ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ হিসেবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সভায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন এবং যুক্তিপূর্ণ ভাষায় আন্তর্জাতিক সমস্যা সমূহের সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছেন বিধায় বঙ্গবন্ধু বিশ্ব পরিমন্ডলে শান্তির দূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। বঙ্গবন্ধুই এশিয়ার দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি এই পদকে ভূষিত হোন।
স্বাধীন ও দৃঢ় চিত্তের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন শান্তির প্রতীক এবং বিশ্ব শান্তি আন্দোলনের দৃঢ় সমর্থক। যিনি ১৯৫৭ সালে তৎকালীন মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করার পর, পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ব্যক্তিগত দূত হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন। উদ্দেশ্য রাষ্ট্রসমূহের রেষারেষি ও আগ্রাসন থেকে সাধারণ মানুষের মুক্তি।
বঙ্গবন্ধু জীবনব্যাপী নিপীড়িত, নির্যাতীত, শোষিত-শাসিত বাঙালির জন্য ছুটে বেড়িয়েছেন দেশ-বিদেশে। যেখানেই বক্তব্য, ভাষণ প্রদান করেছেন, সেইখানেই আবেদন-নিবেদন করেছেন শান্তির পক্ষে। দেশ স্বাধীন হবার পর পরই নিশ্চিত করেছেন বাঙালি জাতির মৌলিক অধিকার। সফর করেছেন সোভিয়েত ইউনিয়ন। যোগাযোগ রক্ষা করেছেন ১১৬ টি দেশের সাথে। ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারত সফরে যান। ওইদিন কলকাতা মহানগরীর বিগ্রেড ময়দানে ২০ লক্ষাধিক মানুষের মহা জনসমুদ্রে মহান এই নেতা বক্তৃতা করেছিলেন। দ্বি-পাক্ষীয় আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি ওই সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে তাঁর জন্মদিনে আগামী ১৭ মার্চ ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান।
শান্তির অগ্রনায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের মিত্রদেশ সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর করেন। বিশ্ব শান্তি এবং নিজের দেশ ও বিশ্বের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বরে আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ামে অনুষ্ঠিত জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে যোগদান করেন। ওই সম্মেলনে সর্বমোট ছয় নেতার নামে যে তোরণ নির্মান করা হয়, তার মধ্যে জীবিত দু’নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যজন মার্শাল জোসেফ ব্রোজ টিটো। ওই দিনে আলজেরিয়ার মঞ্চে দাঁড়িয়েই বঙ্গবন্ধু যোষণা করেছিলেন, ‘‘বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত, শোষক ও শোষিত। আমি শোষিতদের পক্ষে।” তাঁর এই বক্তব্যে স্পষ্ট হয়, তিনি ছিলেন বিশ্বের সকল শোষিতদের এবং শান্তির পক্ষে।
মুক্তিযুদ্ধের কালপর্বে ভারত সোভিয়েত শান্তি, মৈত্রী ও সহযোগিতা-চুক্তি ১৯৭১ এবং বাংলাদেশ-ভারত শান্তি ও সহযোগিতা চুক্তি ১৯৭২, বাংলাদেশে মৈত্রী সম্পর্কে উপমহাদেশে উত্তেজনা প্রশমন ও শান্তি স্থাপনের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু।
ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের নীতিকে পরিহার করে তিনি গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি এবং বন্ধুত্বের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি কাড়েন। বিভিন্ন সভা সম্মেলনে দেওয়া বক্তৃতা এবং তাঁর লেখা মূল্যবান ৩ টি গ্রন্থে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর প্রচেষ্ঠা ও আকুতির বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে।
রাশিয়া হউক, আমেরিকা হউক, ব্রিটেন হউক, চীন হউক যে-ই শান্তির জন্য সংগ্রাম করবে তাদের সাথে আমরা সহস্র কন্ঠে আওয়াজ তুলতে রাজি আছি, ‘আমরা শান্তি চাই’। কারণ যুদ্ধে দুনিয়ার যে ক্ষতি হয় তা আমরা জানি ও উপলদ্ধি করতে পারি; বিশেষ করে যে-দেশকে পরের দিকে চেয়ে থাকতে হয়, কাঁচামাল চালান দিতে হয়। যে দেশের মানুষ না খেয়ে মরে, সামান্য দরকারি জিনিস জোগাড় করতে যাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে, যে দেশে যুদ্ধে যে কতখানি ক্ষতি হয় তা ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের কথা মনে করলেই বুঝতে পারবেন। কোথায় ইংরেজ যুদ্ধ করেছে, আর তার জন্য আমার দেশের ৪০ লক্ষ লোক শৃগাল কুকুরের মতো না খেয়ে মরেছে। তাদের পাট, চা, তুলা অন্যান্য জিনিস বিক্রি না করলে দেশের জনগণের কষ্টের সীমা থাকবে না। দুর্ভিক্ষ মহামারি সমস্ত দেশকে গ্রাস করবে। তাই মানুষের মঙ্গলের জন্য,পাকিস্তানের স্বার্থের জন্য-যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।”
"আমার একান্ত কামনা, উপমহাদেশে অবশেষে শান্তি ও স্থিতিশীলতা। প্রতিবেশিদের মধ্যে পারস্পারিক বিরোধিতার বন্ধ্যা নীতির অবসান হোক। আমাদের জাতীয় সম্পদের অপচয় না করে আমরা যেন তা আমাদের দেশের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে ব্যবহার করি। দক্ষিণ এশিয়ার একটি শান্তিপূর্ণ অঞ্চলে পরিণত করায় আমরা সচেষ্ট রইব, যেখানে আমরা প্রতিবেশী হিসেবে পাশাপাশি বাস করতে পারি এবং যেখানে আমাদের মানুষের মঙ্গলার্থে আমরা গঠনমূলক নীতিমালা অনুসরণ করতে পারি। যদি আমরা সেই দায়িত্বে ব্যর্থ হই, ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।”
১৯৭৪ সালের মার্চের ৪ তারিখে তিনি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে এক জনসভায় বলেছিলেন, ‘এই উপমহাদেশে আমরা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল আর শ্রীলঙ্কা মিলে শান্তিতে বসবাস করতে চাই। আমরা কারও সঙ্গে বিবাদ চাই না। আমরা স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে, আত্মমর্যাদার সঙ্গে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ মনোভাব নিয়ে বাস করতে চাই। আমি চাই না যে আমাদের বিষয়াদিতে কেউ হস্তক্ষেপ করুক। আমরাও অন্যের বিষয়াদিতে হস্তক্ষেপ করতে আগ্রহী নই।’
পৃথিবীর বৃহত্তম শক্তি যে অর্থ ব্যয় করে মানুষ মারার অস্ত্র তৈরি করছে, সেই অর্থ গরিব দেশগুলোকে সাহায্য দিলে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা হতে পারে।
শান্তির প্রতি যে আমাদের পূর্ণ আনুগত্য, তা এই উপলদ্ধি থেকে জন্মেছে যে, একমাত্র শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই আমরা ক্ষূধা, দারিদ্র্য, রোগ-শোক, অশিক্ষা ও বেকারত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য আমাদের সকল সম্পদ ও শক্তি নিয়োগ করতে সক্ষম হবে।১৯৫৭ সালে আমি পাকিস্তান পার্লামেন্টারি ডেলিগেশনের নেতা হিসেব চীনা দেশে যাই। আপনি, আপনার সরকার ও জনগণ আমাকে ও আমার দলের সদস্যদের যথেষ্ট আদর আপ্যায়ন করেছেন এবং আমাকে আপনাদের পার্লামেন্টে বক্তৃতা দিতে দিয়ে সে সম্মান দিয়েছিলেন তা আজও আমি ভুলি নাই। আমি আপনাদের উন্নতি কামনা করি। নিজের দেশে যে নীতি আপনারা গ্রহণ করেছেন আশা করি অন্য দেশে অন্য নীতি গ্রহণ করবেন না। আপনারা সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করেন আর আমার দেশে চলেছে ধনতন্ত্রবাদ, আর ধনতন্ত্রবাদের মুখপাত্রকে আপনারা দিতেছেন সার্টিফিকেট। আপনারা আমেরিকান সরকারের মতো নীতি বর্হিভূত কাজকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। দুনিয়ার শোষিত জনসাধারণ আপনাদের কাছ থেকে অনেক কিছূ আশা করেছিলেন। যেমন আমেরিকানরা নিজের দেশে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন, আর অন্যের দেশে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য গণতন্ত্রকে হত্যা করে ডিক্টেটর বসাইয়া দেয়”।
একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি । এই নিরন্তর সম্পৃতির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে”। শান্তির প্রতি যে আমাদের পূর্ণ আনুগত্য, তা এই উপলদ্ধি থেকে জন্মেছে যে একমাত্র শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই আমরা ক্ষূধা, দারিদ্র্য, রোগ-শোক, অশিক্ষা ও বেকারত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য আমাদের সব সম্পদ ও শক্তি নিয়োগ করতে সক্ষম হবো।"
১৯৭২ এ রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণের আগেই তিনি নতুন দেশের শিক্ষা নিয়ে ভেবেছেন। বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা, তাঁর লিখিত গ্রন্থ এবং তৎকালীন সরকার কর্তৃক নানা পদক্ষেপ থেকে তাঁর শিক্ষা সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গিতে বৈষম্যহীন শিক্ষা ব্যবস্থার তিনি স্বপ্ন দেখেছেন। বাংলাদেশ সার্বিক উন্নয়নে তাঁর শিক্ষা ভাবনা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে।
শিশু সুরক্ষা, নারী অধিকার, নারী শিক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়নে তাঁর সূদুর প্রসারি দৃষ্টি ভঙ্গি ও পদক্ষেপ দেশের নারী জাগরণে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। সমাজ, সংস্কৃতি, সাহিত্য কৃষ্টি শিল্পকলায় উন্নয়নের জন্য এবং নতুন প্রজন্মকে সৃজনশীল মানব সম্পদে পরিনত করা ও দৃষ্টি ভঙ্গির সম্প্রসারণে তাঁর কর্মসূচী খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে ।
আত্মশক্তি, স্বনির্ভরতা অর্জন ও কৃষি ক্ষেত্রে গৃহীত পরিকল্পনা যুগান্তকারী ভূমিকা রেখে চলছে। বাংলাদেশে কৃষি ক্ষেত্রে সাফল্য বিশ্ববাসীর জন্য অনুকরণীয়।
বাংলাদেশ নাম তাঁরই দেয়া। কবি গুরুর ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ তিনি জাতীয় সংগীত এবং বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান রণ সংগীত হিসেবে নির্বাচিত করেন। তার রাজনৈতিক ও রাষ্ট্র ভাবনায় রবীন্দ্র নজরুলের চেতনা লক্ষণীয় ।
আধুনিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের উদ্যোগ নেন। রাষ্ট্র হবে শান্তি ও কল্যাণের। অন্যান্য দেশের মানুষের কাছে যিনি ছিলেন স্বাধীনতার স্বপ্নের প্রতীক। তাঁর দেশ প্রেম, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, মানুষের প্রতি প্রবল ভালবাসা পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। তিনি তেজোদ্দীপ্ত আত্মপ্রত্যয়ী এক বিশুদ্ধ বাঙালি।
নিজস্ব সংস্কৃতির বিকাশ, চর্চা ও জাগরণের মাধ্যমে একটা জাতি সমৃদ্ধি লাভ করে। তিনি রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলন, সংগঠন পরিচালনা ও সফলতায় অসামান্য ভূমিকা রাখেন। তাঁর শিল্প সাহিত্য ভাবনা ছিল উন্নত, তিনি রাজনৈতিক কবির অভিধায় অভিষিক্ত হয়েছেন।
সমকালীন বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো অস্ত্র প্রতিযোগিতা, অসম বাণিজ্যনীতি ও দৃষ্টি ভঙ্গির সমালোচনায় তিনি ছিলেন মূখর। তিনি বলেছেন," তোমরা অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ কর এবং এই সম্পদ দুনিয়ার দুঃখি মানুষকে বাঁচানো জন্য ব্যয় করো। তাহলে দুনিয়ার শান্তি ফিরে আসবে।"
তিনি নানা বক্তৃতায় সৃজনশীল উন্নত জীবনযাপনের অপার সম্ভাবনার কথাও বলেছেন। বিশ্ব ইতিহাস ও বিশ্বের সকল মানুষের কল্যাণে তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনকে উৎসর্গ করেছেন । সাম্য, মৈত্রী, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার যারা ভূলন্ঠিত করে তাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রুখে দাঁড়িয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু একটি চেতনা, একটি দর্শন । বঙ্গবন্ধু মানে মুক্তি। এই মুক্তি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক। তাঁর দর্শন গ্রহণ করে আমরা আলোকিত হচ্ছি এবং ব্যাপৃত থাকবো অধিক আলোকের অন্বেষায়। বিভিন্ন দেশের ক্ষূধা ও দারিদ্রতা দূর করার ক্ষেত্রে তাঁর কৃষি অর্থনীতি ভাবনা আমাদেরকে অনুপ্রানিত করছে। বর্ণ বৈষম্য, জাতিগত দাঙ্গা এবং বিভিন্ন দেশে ও রাষ্ট্রের সাথে অন্য রাষ্ট্রের বিরোধ এবং যুদ্ধ অবসানের ক্ষেত্রে তাঁর দর্শন বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে।
তাঁর অবদান ও কর্ম আমাদের আদর্শ। শোষণ ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলাই ছিল তাঁর লালিত স্বপ্ন । তাঁর এই লালিত স্বপ্ন সকলের মাঝে সঞ্চারিত হচ্ছে। তাঁর চিরঞ্জীব প্রেরণা বর্তমান ও আগামী প্রজন্মকে দেশ সেবায় ব্রতী হতে অনুপ্রাণিত করবে। তাঁর জীবনী অভিজ্ঞতা আমাদের অনুপ্রাণিত করবে এবং দীক্ষা দিবে বিশাল মনের মানুষ হতে গরীব দরিদ্রদের ভালবাসতে এবং পাশে দাঁড়াতে।
দুর্নীতি মুক্ত সমাজ গড়তে তাঁর আদর্শ খুবই সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। তাঁর নির্দেশিত পথে আমরা চললে শান্তি সমৃদ্ধিতে জীবন ও দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হব। তিনি বাংলাদেশের হৃদয়ে দেশপ্রেমের মূর্ত প্রতীক। দেশের আপামর মানুষ ছিল তাঁর শক্তি সাহস। এই শক্তি সাহস আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যতের যেকোন সমস্যা মোকাবেলায় সহায়ক হবে।
জাতীর জনকের আদর্শ চির অম্লান। তাঁর প্রেরণায় আমরা পথ বেয়ে চলেছি সোনালী ভবিষ্যতের দিকে। শুধু বাঙালি জাতির জন্য নন, তিনি সারা বিশ্বের বন্ধু। শুধু বাঙালির গৌরব নন, যিনি গোটা বিশ্বের আপামর জনগোষ্ঠীর গৌরব। তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা ও আমার দেখা নয়া চীন উচ্চ সাহিত্যমানেপূর্ণ ৩ টি আঁকর গ্রন্থ। বাঙালি জাতির ইতিহাসের এক অনবদ্য দলিল। যা পাঠে আমরা বিশ্ব শান্তির জন্য কাজ করতে অনুপ্রাণিত হবো । দেশ প্রেম, সাহস, সততা, নিষ্ঠা, আত্নত্যাগে মহিয়ান ব্যক্তিত্বের উদাহরণ দিতে গেলে গভীর শ্রদ্ধা ও সগৌরবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের কথা আমাদের আলোচনায় বার বার চলে আসে। তাঁর জাদুকরী নেতৃত্ব, গভীর দেশ ও মানব প্রেম ছিল আকাশ স্পর্শী। যা আমাদের প্রতিনিয়ত নানাভাবে আলোড়িত করে। তিনি বিশ্ববাসীর জন্য একজন আইডল।
যাঁর ভাবনার সবটা জুড়েই ছিল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কল্যাণ ও শান্তি। বঙ্গবন্ধুর মতো ত্যাগী নেতা সারাবিশ্বে বিরল। তাঁর লেখা ও বক্তৃতার হীরক দ্যুতির বিস্তার বিশ্বময়। এক বর্ণাঢ্য মহাকাব্যের মত ছিল তাঁর জীবন। তিনিই মুক্তি একবংশ শান্তির দূত। কৃষক, শ্রমিক তথা আপামর মেহনতী মানুষের নেতা হিসেবে তিনি সারাবিশ্বে খ্যাতিমান। বিশ্ববাসী তাঁর জীবন থেকে জেনেছে কীভাবে অধিকার আদায় করে নিতে হয়। তিনি শুধু নিজ দেশের বাঙালি কিংবা এশিয়ার মানুষ নিয়ে ভাবতেন না; ভাবতেন সমকালীন মানবজাতির কল্যাণ নিয়ে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সৎ, মেধাবী, সাহসী, দায়িত্বশীল, পরোপকারী, দেশপ্রমিক, মানবতাবাদী, আদর্শবান নেতা তৈরীর ক্ষেত্রে তিনি একটি হীরকোজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি মানবরুপী অতিমানব, সাধারণরূপী অসাধারণ। তার দূর্লভ বক্তৃতা ও অনন্য লেখা এবং মহাকীর্তি বাঙালি তথা বিশ্ববাসীর সম্পদ। অতীতে ও বর্তমানে তিনি যেভাবে বাঙালি ও বিশ্ববাসীর মনের মুকুরে স্বমহিমায় বিরাজ করছেন; তেমনি ভাবে অনাগত দিনেও মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা কুড়াবেন এবং বিশ্ব ইতিহাসে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর অবস্থানে থাকবেন।"
লেখক :শিক্ষক, গবেষক, নাট্যকার ও শিশু সাহিত্যিক।
পাঠকের মতামত:
- পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন রোহিত শর্মা
- ‘আদালতে দোষী হলেও জনতার কাছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বীর’
- হত্যাচেষ্টা মামলায় সালমান-পলক ৪ দিনের রিমান্ডে
- ডেসটিনির এমডিসহ ১৯ জনের ১২ বছরের কারাদণ্ড
- জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালাস পেলেন খালেদা জিয়া
- ‘পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করার কাজ চলছে’
- ‘বিতর্কিত ভূমিকায় জড়িত সব কর্মকর্তাকে ধরা হবে’
- সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের নামে প্রথম মামলা
- প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৪ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা
- 'শোষকের গুলিতে প্রাণ দিতে প্রস্তুত কিন্তু জনগণের অধিকারের প্রশ্নে আপোষ হবে না'
- যাত্রাভঙ্গ
- সবার আমি ছাত্র
- দাবানলের কারণে আবার পেছালো অস্কার মনোনয়ন
- পেট খালি রাখলেই বিপদ
- ‘বিএনপির সংস্কার কর্মসূচি জাতির মুক্তির সনদ’
- ঘোষণাপত্র জারি হবে ছাত্রদের নেতৃত্বে, উপস্থিত থাকবেন সবাই
- সিটি মিনিস্টার পদ থেকে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ
- সাতক্ষীরায় প্রায় ২৭ লক্ষ টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ করেছে বিজিবি
- শ্যামনগরে পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে ঐতিহ্যবাহী মোরগ লড়াই
- কুশিয়ারা তীরে তিনদিনের মেলায় ২০ কোটি টাকার মাছ বিক্রি
- কোটচাঁদপুরে কাঠ রিফাইন করা বয়লার বিস্ফোরণে নিহত ২
- সব বিনিয়োগ সংস্থাকে এক ছাতার নিচে আনার আহ্বান
- জামালপুরে জাতীয় কবিতা পরিষদের কমিটি গঠন
- মাগুরায় ইসাডোর শীতবস্ত্র বিতরণ
- রক্ষাকবজ হিসেবে জামায়াত নেতাদের তদবির
- একমাস পর সর্বনিম্ন সংক্রমণ শনাক্ত ভারতে
- বিএনপি-জামায়াত রাজনীতির বিষ
- সুবর্ণচরে চর জিয়া উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে আলোচনা সভা
- মঞ্চে গিটার বাজাতে বাজাতেই মারা গেলেন পিকলু
- বিজয় দিবসে শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের মিলন মেলা
- খাগড়াছড়িতে বাঙ্গালি ছাত্র পরিষদের সড়ক অবরোধ
- মাকে বাঁচাতে জবি শিক্ষার্থীর আকুতি
- পদত্যাগ করে দেশ ছাড়লেন শেখ হাসিনা
- নিউ ইয়র্কে সাকিব আল হাসানের নয়া কৌশলে চাঁদাবাজি
- টিউলিপের বিকল্প খুঁজছে লেবার পার্টি
- পাঠ্যবইয়ে র্যাপার হান্নান ও সেজান
- ডেঙ্গুতে আরও ৪ মৃত্যু, একদিনে হাসপাতালে ২৪১ জন
- তোমার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম যে ব্যক্তিটি খুনি মোশতাককে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, তিনি মাওলানা হামিদ খান ভাসানী, যাকে তুমি পিতৃজ্ঞানে শ্রদ্ধা করতে
- সড়কে মৃত্যু: প্রতিদিনের ট্র্যাজেডি এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব
- 'আমি নিশ্চিত, পিতা মুজিব যদি রাষ্ট্রপতির প্রটোকল মেনে বঙ্গভবনে থাকতেন, তাহলে বাঙালির এতো বড় মহাসর্বনাশ কেউ করতে পারত না'
- লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানল
- চবিতে চালু হলো দ্রুতযান স্পেশাল বাস সার্ভিস
- বাইসাইকেল পেয়ে খুশি ২৫ নারী শিক্ষার্থী
- ‘বঙ্গভবন থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামানো ঠিক হয়নি’
- সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র কারাগারে